আবেদন করুন যুবশ্রী প্রকল্পে এবং প্রতিমাসে ১৫০০ টাকা পেয়ে যান
পশ্চিমবঙ্গে ক্রমাগত বেকারত্ব বাড়ছে। আর তাই এই মূল্যবৃদ্ধির আবহে বেকারদের সহায়তা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের শ্রমদপ্তরের অধীনে থাকা কর্মসংস্থান বিভাগের পক্ষ থেকে যুবশ্রী প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। এই যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের বেকার যুবক-যুবতীরা প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা পেয়ে থাকেন। রাজ্যের সমস্ত বেকার যুবক-যুবতীরা যাতে নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরা গড়ে তুলতে পারে তার জন্যই মূলত এই ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। আপনিও যদি পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী একজন কর্মহীন যুবক কিংবা যুবতী হয়ে থাকেন তবে এই প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন।
এই প্রকল্পের অধীনে থাকা বেকার যুবক-যুবতীরা কি কি সুবিধা পেয়ে থাকেন?
যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে থাকা বেকার যুবক যুবতীরা প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এই টাকা প্রতি মাসে যুবক যুবতীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি রাজ্য সরকারের তরফে ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে।
কারা এই প্রকল্পে আবেদনের যোগ্য?
১. পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যে সমস্ত যুবক-যুবতী কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি ক্ষেত্রে কাজের সঙ্গে যুক্ত নয় তারাই এই প্রকল্পে আবেদনের যোগ্য।
২. যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে আবেদনকারী যুবক অথবা যুবতীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
৩. আবেদনকারী যুবক অথবা যুবতীর নাম অবশ্যই এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নথিভুক্ত থাকতে হবে।
৪. আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বীকৃত যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৫. এই প্রকল্পের অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে একজন যুবক অথবা যুবতীর বয়স ১৮ বছর থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
৬. আবেদনকারী যুবক অথবা যুবতী যদি রাজ্য সরকারের থেকে কোনরকম আর্থিক সহায়তা কিংবা ঋণ গ্রহণ করে থাকেন তবে তিনি এই প্রকল্পের অধীনে আবেদনের যোগ্য নন।
৭. একটি পরিবার থেকে যেকোনো একজন সদস্যই এই প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করার সুবিধা পাবেন।
চলুন তবে দেখে নেওয়া যাক কিভাবে আপনারা এই প্রকল্পের অনুদানের জন্য আবেদন করবেন?
১. যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://employmentbankwb.gov.in/ -এ যেতে হবে।
২. এরপর হোম পেইজে থাকা New Enrolment Job Seeker অপশনে আপনাকে ক্লিক করতে হবে।
৩. উপরোক্ত অপশন এ ক্লিক করলে আপনার সামনে একটি নতুন পেজ আসবে, তাতে থাকা Terms and Condition গুলি পড়ার পর নিচে থাকা অপশনে টিক করে Accept and Continue এ ক্লিক করুন।
৪. এরপর আপনার সামনে যুবশ্রী প্রকল্পে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মটি চলে আসবে। ওই ফর্মে আপনার নাম, পিতার নাম, স্বামী কিংবা স্ত্রী থাকলে তার নাম, আপনার লিঙ্গ, ঠিকানা, ইমেইল আইডি, ধর্ম, কাস্ট (জেনারেল/ তপশিলি জাতি/ তপশিলি উপজাতি/ ওবিসি), বৈবাহিক অবস্থা (বিবাহিত, অবিবাহিত, বিধবা অথবা ডিভোর্সড), জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, বিশেষভাবে সক্ষম অথবা প্রতিবন্ধী কিনা, এক্স-সার্ভিসম্যান কিনা তা সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে।
৫. এরপর ওই একই পেজে আপনাকে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। এর পাশাপাশি আপনি শেষ কোন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, কোন বোর্ড থেকে শেষ পরীক্ষাটিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন, কোনো ক্ষেত্রে স্পেশালাইজেশন থাকলে সেটি, কোন বছরে পাশ করেছেন এবং কতো শতাংশ নম্বর নিয়ে পাস করেছেন তা উল্লেখ করতে হবে।
৬. এরপর আপনি কোন কোন ভাষায় কথা বলতে জানেন, সেই ভাষাটি লিখতে জানেন কিনা, সেই ভাষাটি পড়তে জানেন কিনা তা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৭. তারপর আপনাকে আপনার শারীরিক পরিমাপ (উচ্চতা, ওজন, ছাতি) সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৮. এরপর আপনার কোথাও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে। যদি পূর্বে কোথাও কাজের অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তবে কোথায় কাজ করতেন, কি ধরনের কাজ করতেন তা উল্লেখ করতে হবে।
৯. সবশেষে আপনি যে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা তার প্রমাণপত্র (ভোটার কার্ড/ রেশন কার্ড/ পাসপোর্ট) এবং ওই প্রমাণপত্রের আইডি নম্বর, আপনি BPL কিনা এবং আপনি যদি কোন অতিরিক্ত তথ্য উল্লেখ করতে চান তা উল্লেখ করতে হবে।
১০. এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলি আপলোড করে ক্যাপচা কোডটি পূরণ করে নিচে থাকা বক্স দুটিতে ক্লিক করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
সাবমিট অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে একটি পেজ আসবে যাতে আপনার এনরোলমেন্ট নম্বর সহ বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করা থাকবে। এর পাশাপাশি আপনার রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরে আইডি এবং পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে। সাবমিট অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে যে পেজটি আসবে সেটি প্রিন্ট করে আবেদনের ৬০ দিনের মধ্যে আপনাকে নিকটবর্তী এক্সচেঞ্জ অফিসে জমা দিতে হবে। অন্যথায় আপনার আবেদনটি গ্রাহ্য হবে না। অন্যদিকে একবার আবেদন করা হয়ে গেলে আপনি দ্বিতীয়বার আবেদন করতে পারবেন না। এক্সচেঞ্জ অফিসে আপনাকে আপনার ঠিকানার প্রমাণপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ অন্যান্য যে ডকুমেন্টসগুলি ফর্ম ফিলাপের সময় আপলোড করা হয়েছে সেগুলি নিয়ে যেতে হবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি:-
১. বয়সের প্রমাণপত্র ।
২. বাসিন্দার প্রমাণপত্র (ভোটার কার্ড/ আধার কার্ড/ পাসপোর্ট/ রেশন কার্ড)।
৩. জাতিগত শংসাপত্র।
৪. প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট।
৫. শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র।
৬. সি. ভি
৭. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ফটো।