Anandadhara: আনন্দধারা প্রকল্পে সুখবর দিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এবার স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্নপূরণ সকলের!
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) তরফে আনন্দধারা প্রকল্প (Anandadhara Scheme 2025) নিয়ে বড় সুখবর দেওয়া হল। আমরা প্রায় বলতে গেলে বছরের শেষে এসে উপস্থিত হয়েছি এবং কিছু দিন বাদেই ২০২৫ সালকে বরন করে নেওয়ার জন্য সকলেই প্রস্তুত হব এবং এরই মধ্যে রাজ্যের মহিলাদের জন্য বড় সুখবর দিলো রাজ্য সরকার।
West Bengal Anandadhara Prakalpa 2025
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) রাজ্যের জনগণের আর্থিক সুরক্ষার স্বার্থে বিভিন্ন রকম প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছেন, যার মাধ্যমে রাজ্যের জনগণ অনেক উপকৃত হচ্ছেন। গ্রামের মহিলারা নিজস্ব দক্ষতার মাধ্যমে যে কাজ গুলি করে থাকেন, সেই গুলোকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য সব জায়গায় কাজের প্রতিভাকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর তরফে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছে।
Women Self Help Groups (SHGs)
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলারা যাতে তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারেন, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, এই স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলোর আর্থিক সহায়তার পরিমাণ আরও ১০ কোটি বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১২ লক্ষ ১ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এই গুষ্টি গুলোর সঙ্গে প্রায় ১.২১ কোটি পরিবার যুক্ত রয়েছে।
আনন্দধারা প্রকল্প কি?
স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলার প্রধান উদ্দেশ্যই হল গ্রামীন এলাকার মহিলাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলা (Govt Scheme for Women). স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত যে সমস্ত মহিলা রয়েছেন, যারা সেলাই এর পারদর্শী হয়ে থাকেন আবার কেউ হোম মেড খাবার ও বিভিন্ন রকম শৈল্পিক নৈপুূর্ণতা দিয়ে বিভিন্ন জিনিস গড়ে তোলেন।
আনন্দধারা প্রকল্প আবেদন পদ্ধতি
এই সমস্ত প্রতিভা গুলিকে শুধুমাত্র নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে এই শৈল্পিক সত্তাকে সব জায়গায় প্রকাশ করার জন্যই আনন্দধারা প্রকল্পে স্বনির্ভর গোষ্ঠী চালু করা হয়েছে। গ্রামের মহিলাদের বিভিন্ন জিনিস বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করার মাধ্যমে যে অর্থ উপার্জন হয় সেই অর্থই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলাদেরকে দেওয়া হয়। সরকারি স্কুলের যে ইউনিফর্ম গুলো বিনামূল্যে দেওয়া হয় সেই ইউনিফর্ম তৈরির দায়িত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দিয়েছেন, যাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সাথে নিযুক্ত ব্যক্তিরা একটু বেশি আর্থিক সচ্ছলতা পেতে পারে।
West Bengal Rural Livelihoods Mission
বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় যে মেলা অনুষ্ঠিত হয় সেই মেলাতেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিস নিয়ে একটি পসরা বসে, যেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তৈরি আচার, বিভিন্ন কারুকার্য সেলাই, আসন, ঘর সাজাবার জিনিস প্রভৃতি বিক্রি হয়। আগামী বছরও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেশবন্ধু পার্কে ১০ ই জানুয়ারি এবং পার্কসার্কাস ময়দানে ২৪ জানুয়ারি দুটি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্র বিক্রয় করা হবে।
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত ২১ টি মেলার মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলি প্রায় ১২.২১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় করেছিল। শুধু তাই নয়, রাজ্যের পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে পশ্চিমবঙ্গের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত মহিলারা যদি কোন কারনে মেলা বা কোন জায়গায় এসে পণ্য বিক্রয় করতে না পারে।
তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরেকটি বড় সুযোগ করে দিয়েছেন, সেটি হল বাড়িতে বসে অনলাইন মাধ্যমে বিক্রয় করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য গুলিকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে তুলে আনতে রাজ্য সরকার ই-বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মহিলারা ঘরে বসেই তাদের তৈরি পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবে। এই উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে অনেক মহিলারা বাড়িতে বসেই আর্থিক সুরক্ষা পাচ্ছেন।
মহিলারা তাদের নিজেদের পায়ে দাড়ানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়েছেন সেই সাথে নিজেদের প্রতিভা কে সর্ব জায়গায় প্রকাশ করার জন্য একটি মাধ্যম পেয়েছেন, যার মাধ্যমে তাদের নিজস্ব প্রতিভা তুলে ধরতে পারছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের (Anandadhara) মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর উপরে তোলার চেষ্টা করছেন তারও একটি অংশ হলো এই স্বনির্ভর গোষ্ঠী।
বিনামূল্যে রেশন চাইলে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকা মানতে হবে। নববর্ষের আগে বড় খবর
এই স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলো যাতে ধীরে ধীরে আরো বেশি আত্মপ্রকাশ করে এবং এর মাধ্যমে যাতে গ্রামের মহিলারা আরো বেশি আর্থিক নিরাপত্তা পেতে পারে তার জন্যই আরও ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে চলেছেন এই প্রকল্পে।
আগামীতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী আরো বড় ভাবে আত্মপ্রকাশ করবে এমনটাই জানা যাচ্ছে। এর ফলে গ্রামের মহিলারা আরো বেশি আর্থিক নিরাপত্তা পাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাধ্যমে।
Written by Shampa Debnath