কৃষকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে ৬ টি প্রকল্পের সুবিধা। আবেদন করুন আজই
ভারতের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশাই হলো কৃষিকাজ। তাই বিভিন্ন রাজ্যগুলির রাজ্য সরকার সহ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কৃষকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে বারংবার বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকরী করা হয়ে থাকে। আর তাই আজ আমরা কৃষকদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এমন ৬ টি প্রকল্প সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি, যেগুলির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে লাভবান হতে চলেছেন কৃষকরাই।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ভারতের কৃষকদের জন্য কার্যকরী অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্প হলো প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা। কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেচ কাজের বন্দোবস্ত করতে যাতে কৃষকদের সমস্যা না হয় এবং প্রত্যেকটি জমিতে প্রয়োজনমাফিক জল পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্যই এই প্রকল্পটি কার্যকরী করা হয়েছে। এছাড়াও এই প্রকল্পের অধীনে জলের উৎস সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে জলের অপচয় হ্রাস করা, জল সাশ্রয়কারী বিভিন্ন প্রযুক্তির প্রয়োগ সহ সেচ কাজের ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানারকম সমস্যার সমাধানও করা হয়ে থাকে।
পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই যোজনাটি কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এই যোজনার অধীনে প্রত্যেক বছর কৃষকরা তিনটি কিস্তিতে ৬ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। কৃষকদের সুবিধার দিকটি মাথায় রেখে এই টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। সাধারণত কৃষকদের কৃষিক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য এবং কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় নানাধরনের জিনিসগুলি কেনার ক্ষেত্রে কৃষকদের যাতে সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্যই এই প্রকল্পটি কার্যকর করা হয়েছে।
কমতে চলেছে রান্নার গ্যাসের দাম। নতুন বছরে জনগনকে স্বস্তির সংবাদ সরকারের।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফের জৈব চাষের বিষয়ে প্রচারের জন্য কার্যকরী আরো একটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হল প্রধানমন্ত্রী কৃষি বিকাশ যোজনা। আগামীদিনে ৫ লক্ষ একর জমিকে জৈব চাষের আওতায় আনাই এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। এর পাশাপাশি এই প্রকল্পের অধীনে নাম নথিভুক্তকরণের পর প্রত্যেক কৃষককে একর প্রতি ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। এছাড়াও এই প্রকল্পের অধীনে জৈব চাষ করতে ইচ্ছুক এরূপ কৃষকদের নিয়ে দল কিংবা ক্লাস্টার গঠন করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি আগামী দিনে ভারত জুড়ে ১০ হাজার ক্লাস্টার গঠন করাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ফসল নষ্ট হয়ে গেলেও যাতে কৃষকদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয় তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হলে কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপূরণ কিংবা বীমার টাকা পেয়ে থাকেন। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিমাণ ফসল নষ্ট হলে কৃষকদের ঋণও দেওয়া হয়ে থাকে।
এই সমস্ত প্রকল্পগুলির পাশাপাশি কৃষকদের ফসল সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য বিভিন্ন গ্রাম এলাকাগুলিতে হিমঘর বা স্টোরেজ তৈরি করার জন্য গ্রামীণ ভান্ডারান যোজনা নামক একটি যোজনা কার্যকরী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। স্টোরেজ তৈরি করার পাশাপাশি কৃষি উপকরণ সংরক্ষণ এবং কৃষকরা যাতে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদন করতে পারেন তার দিকেও নজর দেওয়াও এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।
বৃদ্ধ বয়সে কৃষকদের যাতে কোনরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয় তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ মান ধন যোজনা কার্যকরী করা হয়েছে। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী কৃষকরা এই প্রকল্পের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন এবং পরবর্তীতে ৬০ বছর বয়সে ওই সমস্ত কৃষকদের এই যোজনার অধীনে প্রত্যেক মাসে ৩ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়ে থাকে অর্থাৎ এক বছরে একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টাকা পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে মাসিক প্রিমিয়াম হিসেবে কৃষকদের তাদের বয়স অনুসারে ৫৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত প্রিমিয়াম জমা দিতে হয়।