শিক্ষা

ডি.এল.এড পরীক্ষা নিয়ে রীতিমতো কড়া পদক্ষেপ নিল পর্ষদ, কি বলা হলো জেনে নিন

ইতিমধ্যেই প্রাথমিক টেট নিয়ে প্রয়োজনীয় সমস্ত রকমের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে পর্ষদের তরফে। এর মধ্যে প্রাথমিক টেটের সিলেবাস, পরীক্ষার তারিখ, নিয়মাবলী, পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সহ আরও নানাবিধ প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি রয়েছে। তবে এবারে প্রাথমিক টেটের বিজ্ঞপ্তির পাশাপশি রাজ্যের সমস্ত চাকরিপ্রার্থী তথা ডি.এল.এড পরীক্ষার্থীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করা হলো পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে। প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের ডি.এল.এড কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। ডি.এল.এড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই চাকরি প্রার্থীরা প্রাথমিক টেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।

আর এবারে এই ডি.এল.এড-এর পরীক্ষাকে কেন্দ্র করেই রীতিমতো এক অভিনব উদ্যোগ নিতে চলেছে পর্ষদ। আর পর্ষদের তরফে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করার পরই ডি.এল.এড-এর আওতায় থাকা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বারংবার প্রশ্ন উঠেছে যে এই নির্দেশিকায় কি বলা হয়েছে, ডি.এল.এড নিয়ে কি বদল আনতে চলেছে পর্ষদ? আর তাই আজ আমরা এই পোস্টে পর্ষদের এই নতুন নির্দেশিকা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি।

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা যদি ডি.এল.এড কোর্স সম্পন্ন না করে রাখেন তবে তাদের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে গণ্য করা হয় না। আর তাই যেসমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চান তারা ডি.এল.এড কোর্স সম্পন্ন করে থাকেন। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৬০০ টিরও বেশি ডি.এল.এড কলেজ রয়েছে। প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ৪৫ হাজারের চেয়েও বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। দুই বছরের এই কোর্সে চারটি সেমিস্টারের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। তবে এই পরীক্ষা নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। আর তাই এই সমস্ত বিতর্কের অবসান ঘটাতে পর্ষদের তরফে রীতিমতো কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো।

আবেদন করুন এইচডিএফসি স্কলারশিপে এবং পেয়ে যান সর্বোচ্চ ১,০০,০০০ টাকার অনুদান।

পর্ষদের তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, এবার থেকে আর ডি.এল.এড-এর পরীক্ষাগুলি কোনোভাবেই ডি.এল.এড কলেজে নেওয়া হবে না। তার পরিবর্তে এই পরীক্ষাগুলি রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুল এবং কলেজগুলিতে নেওয়া হবে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ডি.এল.এড পরীক্ষার্থীদের ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আর তার ঠিক আগেই পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা হলো। ডি.এল.এড-এর পরীক্ষা নিয়ে বারংবার অভিযোগের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পর্ষদের তরফে সভাপতি গৌতম পাল মহাশয় জানিয়েছেন যে, ডি.এল.এড-এর পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে বারংবার নিয়ম না মানার অভিযোগ উঠেছে আর তাই পর্ষদের তরফে এই সমস্ত দুর্নীতি আটকাতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা হলো।

এরপর পাশাপাশি পর্ষদ সভাপতি আরও জানিয়েছেন যে, পরীক্ষার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার জন্যই এই সমস্ত নিয়মগুলি কার্যকরী করা হয়েছে। এমনকী আগামী দিনেও এই সমস্ত পরীক্ষাগুলিকে কেন্দ্র করে আরও পরিবর্তন আনা হবে এমনটাই আভাস দিয়েছেন তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে। এছাড়াও তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ডি.এল.এড-এর পরীক্ষার কারণে সরকারি স্কুল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠন যাতে কোনভাবে বিঘ্নিত না হয় তার দিকে অবশ্যই নজর রাখা হবে। এদিন শ্রী গৌতম পাল মহাশয় রাজ্যের সমস্ত ডি.এল.এড পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন যে, এবার থেকে শুধুমাত্র ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা নয় ডি.এল.এড-এর চারটি সেমিস্টারের পরীক্ষায় একইভাবে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি স্কুল এবং কলেজগুলিতে গ্রহণ করা হবে।

পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রচলিত পদ্ধতি রয়েছে সেই পদ্ধতি মেনেই পরীক্ষা দিতে হবে পরীক্ষার্থীদের। যেসমস্ত সরকারি স্কুল কিংবা কলেজগুলিতে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে যাবেন পরীক্ষার্থীরা সেই সমস্ত স্কুল কিংবা কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকারাই নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন। তবে এবছর কিছু নির্বাচিত ডি.এল.এড কলেজেই পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি। হঠাৎ করে পর্ষদের তরফে এই সমস্ত সিদ্ধান্ত এবং নির্দেশিকা প্রকাশের কারণে রাজ্যের শিক্ষক এবং ডি.এল.এড পরীক্ষার্থীরা যথেষ্টই অবাক হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে বিভিন্ন ডি.এল.এড কলেজের ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র গোপনে না রাখার এমনকী নিয়ম না মানার যে অভিযোগগুলি উঠেছিলো সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই সমস্ত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *