পেনশন যোজনা নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের, কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে জেনে নিন এখনই
দেশজুড়ে উৎসবে রেশ এখনও কাটেনি, অন্যদিকে ক্রমাগত হারে বেড়েই চলেছে মূল্যবৃদ্ধি। আর এই পরিস্থিতিতে সমস্ত দিক সামলে উঠতে রীতিমতো পকেটে টান পড়ছে সরকারি কর্মীদের। তবে শুধুমাত্র সরকারি কর্মী নয়, পেনশনভোগীরাও বর্তমানে এই মূল্যবৃদ্ধির ভুক্তভোগী। তবে এই সমস্ত পেনশনভোগী সরকারি কর্মীদের জন্য আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফে এমন এক রায় প্রকাশ করা হয়েছে যার কারণে সমস্ত পেনশনভোগী কর্মীদের মনের রীতিমতো খুশির জোয়ার। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টের তরফে সমস্ত পেনশনভোগী কর্মচারীদের কথা মাথায় রেখে কর্মচারীদের পেনশন সংশোধনী প্রকল্প নিয়ে রীতিমতো বড়ো রায় ঘোষণা করা হলো। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের জেরে পরবর্তীকালে পেনশন সংশোধনী প্রকল্প খানিকটা হলেও বদলাতে চলেছে।
আর সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে রীতিমতো লাভবান হতে চলেছেন সরকারি কর্মীরা। যদিও এই মামলা নিয়ে বিতর্কে শেষ ছিলো না। ইতিপূর্বে কেরল, রাজস্থান এবং দিল্লি হাইকোর্টে এই মামলার বিচার হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই এই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত বিতর্ককে উড়িয়ে দিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে এই কর্মচারীদের পেনশন সংশোধন প্রকল্পকে ‘আইনি এবং বৈধ’ বলে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। আর তাই আজ আমরা এই পোস্টে পেনশন সংশোধনী স্কিম এবং তা সংক্রান্ত আদালতের এই নয়া নির্দেশিকা সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক আদালতের তরফে পেনশন সংশোধনী স্কিম সংক্রান্ত বিষয়ে কি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
কর্মীদের বেসিক এবং ডিএ মিলিয়ে যে পরিমাণ অর্থ হয় তার ১২ শতাংশই কোম্পানির তরফে পিএফ এ দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কোনো কর্মীর মূল বেতন এবং ডিএ মিলিয়ে যদি ১৫,০০০ টাকার বেশি হয় তবে প্রতিষ্ঠানের তরফে ওই একই পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়ে থাকে এবং ৮.৩৩ শতাংশ হারে পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া হয়ে থাকে। আর তাতেই যতো বিতর্কে সূত্রপাত। তবে এ বিষয়ে বিতর্কটি শুরু হয়েছিলো মূলত ১৯৯৫ সালে। ইতিপূর্বে ১৯৯৫ সালে EPS-১৯৯৫ এর ১১ ধারায় যে সংশোধনী করা হয়েছিলো তাতেই পেনশন স্কিম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই সংশোধনী কার্যকরী হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ ১৯৯৫ সালের ১৬ই নভেম্বর এর পূর্বে যেসমস্ত সরকারি কর্মচারী কর্মচারী ভবিষ্যৎ তহবিল স্কিম ১৯৫২-এর সদস্য হয়েছিলেন তার প্রত্যেকেই EPS এর সুবিধা ভোগ করতেন।
তবে এই সংশোধনী কার্যকর হওয়ার পরে পেনশনযোগ্য মাইনে ছিল ৬৫০০ টাকা কিন্তু ২০১৪ সালের সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে ১৫০০০ টাকা করা হয়। আর বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার রায়ে এই ১৫,০০০ টাকার সীমা বাতিল করা হয়েছে। যার ফলে রীতিমতো লাভবান হতে চলেছে কর্মীরা। এই ১৫,০০০ টাকার সীমা অপসারণ করা হলে বেসিক বেতন ও ডিএ সহকারে ২০,০০০ টাকা হয়ে যায়। আদালতের এই সিদ্ধান্তে পেনশনের পরিমাণ বাড়তে চলেছে সরকারি কর্মীদের।
টেট অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, আদালতের নয়া নির্দেশ
এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের তরফে সরকারি কর্মীদের জানানো হয়েছে যে, যেসকল যোগ্য কর্মচারীরা এখনও পর্যন্ত পেনশন স্কিমে যোগদান করতে পারেননি তাদের ছয় মাসের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে এবং ওই বর্ধিত সময়ের মধ্যে স্কিমে যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে কেরল, রাজস্থান, দিল্লির হাইকোর্টে এবিষয়ে যে রায় প্রদান করা হয়েছিলো সেক্ষেত্রে স্পষ্টতার অভাব ছিল, যার কারণে কর্মীদের এই অতিরিক্ত সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ১৪২ নম্বর ধারা অনুসারে আদালতের তরফে এরূপ সময় বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি কর্মীদের এও জানানো হয়েছে যে, যেসমস্ত কর্মীরা পেনশন স্কিমে যোগদানের বিকল্প বেছে নেননি তাদের আগামী ছয় মাসের মধ্যেই তা নির্বাচন করতে হবে।
এর পাশাপশি এদিন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের তরফে সরকারি কর্মচারীদের জানানো হয়েছে যে, ২০১৪ সালের পরিকল্পনায় ১৫ হাজার টাকার বেশি বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে যে ১.১৬ শতাংশ অতিরিক্ত অবদানের শর্তটিও অপসারণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র কর্মীরা যদি অতিরিক্ত ১.১৬ শতাংশ অতিরিক্ত অবদানে ইচ্ছুক হন তবে তারা এই অতিরিক্ত অবদান রাখতে পারেন। এর পাশাপশি সুপ্রিম কোর্টের তরফে এও জানানো হয়েছে যে, আগামী ছয় মাসের জন্য এই সিদ্ধান্তটি স্থগিত রাখা হবে। পেনশন কর্তৃপক্ষ যাতে প্রয়োজনীয় তহবিল জোগাড় করতে পারে তার জন্য সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।