Mid Day Meal: মিড ডে মিল স্কিমে নিয়ম বদল! দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত খাবার দেবে?
আগামী বছরের শিক্ষাবর্ষ থেকে কি মিড ডে মিল স্কিমে (Mid Day Meal) দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সকল ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যাহ্ন ভোজন দেওয়া হবে? এমনই এক জল্পনা শুরু হয়েছে সমগ্র রাজ্য জুড়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য মিড ডে মিলের ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। রাজ্যের স্কুল গুলোতে পড়ুয়াদের দুপুরের খাবার দেওয়ার জন্য এই মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে (PM Poshan MDM Scheme 2025).
Mid Day Meal MDM Scheme New Update
এতদিন পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত এই মিড ডে মিল দেওয়া হত। এবার থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়ারা মিড ডে মিল পাবে? মিড ডে মিল চালু করার প্রধান লক্ষ্যই ছিল, যে সমস্ত পড়ুয়ারা অত্যন্ত গ্রাম থেকে পড়তে আসে এবং যাদের পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা তেমনটা উন্নত নয়, সে সমস্ত পড়ুয়ারা যাতে পেট ভরে খাবার খেয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারে।
Pradhan Mantri Poshan Shakti Nirman 2025
এছাড়া পড়ুয়াদের স্কুল মুখী করার জন্যই এই মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। মিড ডে মিল চালু হওয়ার পরে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলোতে পড়ুয়াদের সংখ্যাও অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্গাপুরের টাউনশিপ থানা এলাকার জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ স্কুলের পড়ুয়াদের আরও বেশি স্কুল মুখী করে তুলতে স্কুলের মধ্যই আনা হয়েছে নতুন পরিবেশ। মিড ডে মিল নিয়ে এই স্কুলে বিভিন্ন রকম কার্যকলাপ শুরু করেছেন এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
ভারতে প্রধানমন্ত্রী পোষণ শক্তি নির্মাণ
এই স্কুলের মিড ডে মিলে যে সমস্ত খাবার পড়ুয়াদের পরিবেশন করা হয়, এই সমস্ত সবজি বাজার থেকে কিনে আনা হয় না। স্কুলেরই প্রাঙ্গনে সবজি চাষ করা হয়। এই সবজি দিয়েই মিড ডে মিলের রান্না করা হয়, সেই গুলি পড়ুয়াদের দিয়ে থাকা হয়। দুর্গাপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই সরকারি স্কুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নয় এবারে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়ারা পাবে এই মিড ডে মিলের খাবার।
মিড ডে মিল প্রকল্প
জানা গিয়েছে, এই স্কুলে প্রায় প্রত্যেক দিন ৬০০ জনের বেশি ছাত্র ছাত্রী স্কুলেরই চাষ করা সবজি দিয়ে মিড ডে মিলের খাবার খেয়ে থাকেন। স্কুলের মধ্যেই পড়ুয়ারা এই সমস্ত সবজি নিজেদের হাতে চাষ করেন। নিজের স্কুলে চাষ করা সবজি মিড ডে মিলে রান্না (Mid Day Meal Food) হওয়ার পর, পড়ুয়াদের পরিবেশন করার মধ্যে যেমন শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটা আলাদা আনন্দ থাকে।
সেই সাথে পড়ুয়ারা নিজের হাতে চাষ করা সবজি যখন নিজেদের খাবার পাতে দেখছে, তখন তাদের মধ্যে একটা আলাদা ভালোলাগা কাজ করে। প্রতিদিন সকাল ১০ টার মধ্যে স্কুলে আসার পর প্রার্থনা শুরু হওয়ার আধ ঘন্টা আগে পড়ুয়ারা এক সঙ্গে স্কুলের বাগানে সবজির পরিচর্যা করেন। তারপর সেই সমস্ত সবজি দিয়েই মিড ডে মিলের রান্না (MDM) করা হয়।
জানা যাচ্ছে, এই বছর শীতের মরশুমে আলু, পেয়াজ, ফুলকপি, বাধাকপি, পালং শাক, টমেটো সহ মোট কুড়ি রকমের সবজি চাষ করা হয়েছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, এই বছর ২ হাজার ফুলকপি, ১ হাজার বাধা কপি সহ নানা রকমের শাক সবজি চাষ করা হয়েছে। এই বছর দুর্গাপুরের এই স্কুলে সর্ষে চাষ করা হয়েছে। যার ফলে, রান্নার তেলের জোগান পাওয়া সম্ভব হয়েছে স্কুলেরই চাষ করা সর্ষে থেকে।
স্কুলের বাগানের এই সবজি চাষের দেখাশোনা করার জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে চারটি গ্রুপ রয়েছে। তারাই মিলে মিশে এই সমস্ত সবজি গাছ গুলোর পরিচর্যা করে থাকেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুরের এই সরকারি স্কুলটি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের প্রতিদিন পেট ভরে মিড ডে মিলের (PM Poshan) খাবার খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন।
এছাড়াও সপ্তাহের সোমবার দিনে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় চিকিৎসকদের দ্বারা। এছাড়া চক্ষু পরীক্ষা শিবির, রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই সোমবার দিন পড়ুয়ারাই শুধু মিড ডে মিলের খাবার খায় তা নয়, পড়ুয়ার অভিভাবকরাও খাবার খাওয়ার সুযোগ পায়। পড়ুয়াদের পড়াশোনা শেখানোর পাশাপাশি স্কুলের মধ্যে ছবি আকা, নাচ, গান ও সাংস্কৃতিক একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।
রাজ্যের মধ্যে শুধুমাত্র এই স্কুলেই দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তরফে এই নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত বা ঘোষণা করা হয়নি। তাই বাকি সকল সরকারি স্কুলে আগের নিয়ম মেনেই মিড ডে মিল (Mid Day Meal MDM) দেওয়া হবে। বেশি বা দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত খাবার দেওয়া হবে না।
পড়ুয়াদের স্কলারশিপ নিয়ে নোটিশ জারি হল! সরকারের নির্দেশ সম্পর্কে জানুন
এর ফলে দুর্গাপুরের জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ স্কুলটি শুধুমাত্র পড়াশোনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে তা নয়, সাথে সাংস্কৃতিক পরিবেশ দেওয়া এবং সবজি চাষের মাধ্যমে নিজের কিছু করার মধ্যে যে একটা নিবিড় আনন্দ রয়েছে, প্রত্যেকটি পড়ুয়ার মধ্যে সেই মনোভাব জাগ্রত করা ও ভাবধারাকে জাগিয়ে তোলার মূল লক্ষ্য এই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের।
Written by Shampa Debnath