প্রকল্প

পশ্চিমবঙ্গে একাধিক সরকারি প্রকল্প বন্ধ হবে? কোষাগারের টানাটানি নিয়ে কি সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সরকারের?

West Bengal Government Scheme

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কোষাগারে টানাটানির কারণে রাজ্যের সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে সরকারকে অত্যন্ত হিসেব করে খরচ চালাতে হচ্ছে। আর এই মর্মে রাজ্যের সকল দফতরে নির্দেশিকা ইতি মধ্যেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে যা সকলকে মানতেই হবে নইলে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তৎপরতা

বকেয়া ডিএ দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের তরফে দেওয়া হলেও সরকারের তরফে এই আর্থিক অবস্থার কথা জানানো হয়েছিলো আর এই কারণের জন্য এবার থেকে যে কোন সরকারি দপ্তরের তরফে ৩ কোটি টাকার বেশি অনুদান দেওয়া যাবে না যা আগে ৫ কোটি ছিল। রাজ্যের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজে বেশ উদ্বিগ্ন। প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি প্রতিটি দফতরের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছেন অপ্রয়োজনীয় খরচ বন্ধ করতে হবে এবং বর্তমান বাজেট অনুযায়ীই সমস্ত কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এখন প্রতিটি দপ্তরে ব্যয় সাশ্রয়ের রূপরেখা তৈরি হচ্ছে।

কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?

বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় বহু প্রকল্পের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে রয়েছে। বিশেষ করে GST ক্ষতিপূরণ, কেন্দ্রীয় স্কিমের অংশীদারিত্বমূলক অর্থ ছাড় না হওয়া, এবং রাজ্যের বাড়তি ঋণের সীমাবদ্ধতার জন্য এই সংকট বাড়ছে এই জন্য একাধিক সরকারি প্রকল্প বন্ধ হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই, কিন্তু সরকারের তরফে এমন কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি তাই যে কোন রকমের ভুয়ো খবর থেকে দূরে থাকবেন। কেন্দ্রীয় সাহায্য না পাওয়া, রাজস্ব আয় কমে যাওয়া, বড় বড় প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি, ঋণের বোঝা দ্রুত বাড়া এর মূল কারণ।

ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কী কী সিদ্ধান্ত?

নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, সরকার এখন তিনটি মূল বিষয়ে জোর দিচ্ছে – শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় প্রকল্পেই বরাদ্দ, নতুন প্রকল্প আপাতত বন্ধ, পুরনো প্রকল্পে ব্যয়ের হিসেব নিকেশ। এর পাশাপাশি, সরকারি দফতর গুলিকে অপ্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ, অনুষ্ঠান আয়োজন, গাড়ি কেনা ইত্যাদিতে খরচ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মানুষের উপর কী প্রভাব পড়বে?

যদি সরকারি প্রকল্প গুলি বন্ধ বা স্থগিত হয়, তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষের উপর। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বা রূপশ্রী প্রকল্পে লাখ লাখ পরিবার নির্ভরশীল। তাই এই পদক্ষেপ গুলি বাস্তবায়িত হলে জন মানসে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। সরকারি তরফে এখনই প্রকল্প বন্ধের কথা সরাসরি স্বীকার করা হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বার্তা স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে ‘কঠিন সময় আসছে’!

কৃষক বন্ধু টাকা কবে ঢুকবে 2025? পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই নিয়ে কি জানালো?

উপসংহার

বর্তমানে রাজ্যের আর্থিক সংকট অনেকটাই গভীর। মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে উদ্যোগ নিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে কেন্দ্রীয় সাহায্য না এলে বেশ কিছু জনপ্রিয় সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে এই সংকট কতটা গাঢ় হয় এবং সাধারণ মানুষ কতটা তার প্রভাব অনুভব করেন। ২০২৬ সালের ভোটের আগে এমনটা হলে সমস্যার সম্মুখীন হবে বর্তমান সরকার।

Related Articles