বি.এড পাশ করলেই দেওয়া যাবে টেট, নতুন নির্দেশিকা আদালতের
প্রাথমিক টেট নিয়ে আরও একবার রীতিমতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আদালতের তরফে। প্রাথমিক টেট নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করলেই চাকরিপ্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আর প্রথম থেকেই সমস্ত বিবাদ, বিতর্ক পর্যালোচনা করে বিচারের ক্ষেত্রে বরাবরই চাকরিপ্রার্থীদের সহায় হয়েছে আদালত। তবে এবারে আদালতের তরফে সমস্ত প্রাথমিক টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য যে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে রীতিমতো লাভবান হতে চলেছেন সমগ্র রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীদের কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিলো। তবে অফিসিয়ালভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেও বারংবার সে বিজ্ঞপ্তিতে বদল আনা হয়েছিলো। আর এবারে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তরফে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষায় পর্ষদকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চাকরি প্রার্থীরা শুধুমাত্র বি.এড এ উত্তীর্ণ হলেই যেন তারা প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। আর আদালতের এই সিদ্ধান্তে রাজ্যজুড়ে খুশির বাঁধ ভেঙেছে চাকরিপ্রার্থীদের।
ইতিপূর্বে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিলো তাতে জানানো হয়েছিলো যে, চাকরিপ্রার্থীরা বি.এড এ ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হলে তবেই প্রাথমিক টেট পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। তবে এবারে আদালতের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নয়া নির্দেশে আরো একবার বদল প্রাথমিক টেট এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যোগ্যতায় বদল আনা হবে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে। এর আগে এনসিটিই এর তরফে চাকরিপ্রার্থীদের ৫০ শতাংশ নম্বর পেলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। তবে এবারে এ সংক্রান্ত এক মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে জানান যে, বি. এড উত্তীর্ণ হলেই যেনো চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষায় বসার এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা বি.এড উত্তীর্ণ হলে চাকরি পাবেন কিনা তা নির্ভর করছে এই মামলার ভবিষ্যতের উপর।
ডি.এল.এড পরীক্ষা নিয়ে রীতিমতো কড়া পদক্ষেপ নিল পর্ষদ, কি বলা হলো জেনে নিন
ডি.এল.এড এবং বি.এড কোন কোর্সটি করলে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাথমিক টেট পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব বহুদিনের। এমনকী এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। ডি.এল.এড উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা বি.এড উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রাথমিক টেটে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সুযোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অন্যদিকে রাজস্থান হাইকোর্টের তরফে বি.এড উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের প্রাথমিক টেটে অংশগ্রহণ এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টেও এ সংক্রান্ত মামলা এখনও পর্যন্ত চলছে। আর তাই সমস্ত দিক নজরে রেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বি.এড উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা খুশি, অন্যদিকে ঠিক তেমন ভাবেই টেট পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের কর্তা ব্যক্তিরা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, প্রায় ৭ লক্ষ পরীক্ষার্থী টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে চলেছে। আর আদালতের এই সিদ্ধান্তের কারণে আরও অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সুযোগ পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। আদালতে এই নতুন সিদ্ধান্তের ফলে টেট পরীক্ষায় প্রতিযোগিতা খানিকটা বাড়লেও আগামীতে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীরা টেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়ায় আদালতের এই সিদ্ধান্তে সমগ্র রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীরা যথেষ্ট খুশি।