পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ডিএ নিয়ে বিরাট খুশির খবর, তবে কি যৌথ মঞ্চের দাবি মেনে নেবে রাজ্য সরকার?
বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনের একাংশ তার জন্য অপেক্ষা করতে পারছে না? এখনই কেন কর্ম বিরতির মত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পর্যবেক্ষণে এই মন্তব্য করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় বসে আন্দোলন বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
একের পর এক বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে এবার বৃহস্পতিবার সরকারি কর্মচারীদের একাংশ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। যদিও রাজ্যজুড়ে এখনো পর্যন্ত সমস্ত সরকারি দপ্তরেই কাজকর্ম ঠিকভাবে চলছে বলেই জানা গিয়েছে। এই মুহূর্তে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চলছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। সেই সমস্ত জায়গাতেও দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে সরকারি কর্মচারীরা যথারীতি উপস্থিত হয়েছেন এবং মানুষেরা সেখান থেকে পরিষেবা নিচ্ছেন।
বকেয়া ডিএ নিয়ে বড় খবর?
রাজ্যজুড়ে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের এই আন্দোলনের ফলে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার মত পরিস্থিতি মাঝেমধ্যে দেখা যাচ্ছে, এই প্রসঙ্গেই কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ১৭ই এপ্রিল কর্মচারী সংগঠনের তিন সদস্যের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আলোচনায় বসতে হবে। যাতে সেই আলোচনায় কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয় সেই দিকে নজর রাখার জন্য নির্দেশ দেয় আদালত।
Dearness Allowance সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন বলেই মন্তব্য ডিভিশন বেঞ্চের। বকেয়া ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ আন্দোলন করছেন। আর সেই কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজে ব্যাঘাত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। সেই মামলাতেই হাইকোর্টের বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে আলোচনায় বসার নির্দেশ দেয়। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবের উপস্থিতিতে আগামী ১৭ এপ্রিল সরকারি কর্মচারী সংগঠনের তিন সদস্য আলোচনায় বসবেন।
এর মধ্যেই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে চলতি মাসে দিল্লিতে গিয়ে ধরনা বিক্ষোভ কর্মসূচি করার কথা জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূ, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে যৌথ মঞ্চের তরফে ডেপুটেশন দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টে বকেয়া ডিএ প্রসঙ্গে জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি কর্মচারীরা দপ্তরে যাচ্ছেন কিনা ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানতে চান।
তার জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তারা অফিসে যাচ্ছেন। অনেকে অবশ্য কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জরুরী পরিষেবা ঠিকঠাকভাবে চলছে কিনা বিচারপ্রতি জানতে চাইলে তার জবাবে এ জি জানান, সমস্ত জরুরী পরিষেবা ঠিকঠাক ভাবে চলছে। কোথাও কোনো অসুবিধা নেই। সব দপ্তরেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে (Biometric Attendance) হাজিরা গ্রহণের ব্যবস্থা নেই বলেও জানান তিনি। তখনই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, তাহলে কিভাবে জানবেন, কতজন কর্মী দপ্তরে এসেছেন, আর কাজ করছেন?
ব্রেকিং নিউজ, ডিএ নিয়ে সুর নরম মুখ্যমন্ত্রীর, সরকারি কর্মীদের আজ কি বললেন মমতা ব্যানার্জি।
এরপরেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার জন্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন অপেক্ষা করতে পারছে না? এখনই কেন কর্ম বিরতির মতো পদক্ষেপ? এই প্রসঙ্গে মামলাকারীর দাবি, কর্মবিরতির ফলে ৪৩৬ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। অবিলম্বে সমাধান প্রয়োজন। ১৫ দিন পর আবার এমন পদক্ষেপ করলে তখন কি হবে?
সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠনের আইনজীবী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন আন্দোলন প্রসঙ্গে। তার প্রতিবাদেই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরপরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, কর্মবিরতির পথে না হেঁটে আইনি পদক্ষেপ করা যেত।
এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টে বকেয়া ডিএ মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী DA মেটানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার পুনরায় পিটিশন করে। সেই পিটিশনের পরেও হাইকোর্ট একই রায় বহাল রাখে।
তারপরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে SLP দাখিল করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। সেই মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এখনো পর্যন্ত শুনানি শুরু হয়নি। তবে তার আগেই বকেয়া ডিএ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট ফের আলোচনায় বসার নির্দেশ দেওয়ায় কোনো সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে কি না সেটাই দেখার বিষয়।
আপনাদের মনে হয় জানা নেই যে DA নিয়ে বর্তমানে সুপ্রীম কোর্টে যে কোর্ট কেস চলছে সেটা 2009 এর পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে AICPI অনুযায়ী বকেয়া DA দেওয়ার দাবিতে যার মেয়াদ 31st December 2015 পর্যন্ত ছিল।
আন্দোলন চলছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় রাজ্য সরকরি কর্মীদের AICPI অনুসারে DA দেওয়ার দাবিতে ও মূখ্যমন্ত্রীর মর্জী মাফিক DA দেওয়ার যুক্তির বিরুদ্ধে। AICPI অনুযায়ী DA ছাড়াও এই আন্দোলনের আরো দুটি দাবী হল স্বচ্ছ ভাবে সরকারি রিক্ত পদে নিয়োগ ও অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করন। দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। অনুগ্রহ করে দুটিকে গুলিয়ে ফেলবেন না বা গুলিয়ে দেবেন না।
বিভিন্ন দিক থেকে এই দুটকে এক করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেস্টা চলছে