শিক্ষা

নতুন ক্লাসে উঠলেই মিলবে গিফট, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয়া নির্দেশিকা প্রকাশ রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের

আপনি অথবা আপনার সন্তান কি স্কুলে পাঠরত? আপনি কি জানেন রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রাইমারি এবং হাই স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে? যদি না জেনে থাকেন তবে এই খবরটি আপনার জন্য। সমগ্র বাংলা জুড়ে এখন দীপাবলির রেশ। আর স্বভাবতই উৎসবের কারণে সমগ্র বাংলার স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী ২৮ শে অক্টোবর থেকে স্কুল, কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার নির্দেশ রয়েছে। আর তার কিছুদিন পরেই প্রাইমারি এবং হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ফাইনাল পরীক্ষা।

আর এবারে ফাইনাল পরীক্ষার পর ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হলো পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। রাজ্য সরকার অধীনস্থ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রায় ১৩ দফার একটি গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষকদের জন্য। আর এবার থেকে রাজ্য সরকারের তরফে এই নির্দেশিকা অনুসারেই আগামী দিনে নতুন ভাবে নতুন নিয়মে নতুন শ্রেণীর যাত্রা শুরু করবে ক্ষুদে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে কি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে?
পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক এবং হাই স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় উদ্ধুদ্ধ করার জন্যই রাজ্যের অধীনস্থ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এই গাইডলাইনগুলি প্রকাশ করা হয়েছে বলেই মনে করা হয়েছে। রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে প্রকাশিত এই ১৩ টি গাইডলাইন হলো:-

১. প্রত্যেক বছরে যে সকল ছাত্র-ছাত্রী নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে তাদের উৎসাহ প্রধানের জন্য graduation ceremony এর আয়োজন করতে হবে।

২. graduation ceremony এর এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হবে ২ রা জানুয়ারি অথবা Book Day তে অথবা Book Day এর পরে। তবে এই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করতে হবে। আর ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানানোর এই অনুষ্ঠান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকের দ্বারাই পরিচালিত হবে।

৩. ক্লাস টিচাররা লজেন্স, ক্যান্ডি, মিষ্টি সহ বাচ্চাদের পছন্দের জিনিস দিয়ে তাদের নতুন শ্রেণীতে স্বাগত জানাবেন এবং পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবার জন্য অভিনন্দন জানাবেন।

৪. এর পাশাপাশি ক্লাস টিচাররা নিজেদের ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের নিজস্ব বক্তৃতার মাধ্যমে নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাবেন এবং নতুন শ্রেণীতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন।

৫. সমস্ত ক্লাস টিচাররা তাদের নিজস্ব ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের সাথে পরিচয় পর্ব সমাপ্ত করবেন।

৬. এর পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের নিজস্ব স্কুলের ইতিহাস এবং অন্যান্য বিষয়গুলি সম্পর্কে অবগত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে প্রধান শিক্ষক অথবা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অথবা ক্লাস টিচার অ্যাসেম্বলি বা ক্লাসে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের তাদের স্কুলের ইতিহাস, প্রতিষ্ঠা, স্কুল এতোদিনে কোন কোন বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছে সে সমস্ত বিষয়ে জানাবেন। তবে এখানেই শেষ নয়, প্রধান শিক্ষকদের আরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যাতে তারা রাজ্য সরকার তরফে ছাত্র-ছাত্রীদের যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি দেওয়া হয়ে থাকে, যেমন:- বই, ব্যাগ, স্কুলের ইউনিফর্ম, মিড ডে মিল, জুতো, সেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের অবগত করেন।

আবেদন করুন কৃষকবন্ধু প্রকল্পে এবং সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা

৭. প্রত্যেক স্কুলে একটি বিশিষ্ট ফটো কর্ণার করতে হবে যেখানে সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের ফটো তাদের জন্ম তারিখ সহকারে থাকবে।

৮. প্রত্যেক বছর ছাত্র-ছাত্রী এবং ক্লাস টিচারের একসাথে একটি গ্রুপ ফটো তুলতে হবে এবং ওই ফটো ফটো কর্ণারে রাখতে হবে।

৯. প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর করা একটি বিশেষ চিঠি দিতে হবে। তবে ওই চিঠির বয়ান কি হবে তা সম্পর্কে প্রধান শিক্ষকদের বিশেষ ট্রেনিং দেওয়া হবে, যা খুব শীঘ্রই আয়োজন করা হবে।

১০. এর পাশাপাশি এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্লাস মনিটর, কালচারাল মনিটর, মিড ডে মিল মনিটরের নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।

১১. গ্রুপ লার্নিং এর জন্য ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট গ্রুপ তৈরি করে দেওয়ার কাজও এই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই সমাপ্ত করতে হবে।

১২. পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে উপযোগী হয় এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মনোযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হয় এমন পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৩. ছাত্রছাত্রীদের সম্মান জানানোর নতুন প্রক্রিয়া কার্যকরী করা হলে তার একটি ডকুমেন্টেশন করতে হবে স্কুলের তরফে এবং সেটি একটি বুকলেট আকারে প্রত্যেক বছর স্কুলের তরফে প্রকাশ করতে হবে।

রাজ্য সরকারের এই নয়া সিদ্ধান্তে রীতিমতো খুশি অভিভাবকসহ ছাত্র-ছাত্রীরা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা নতুন ক্লাসে উঠে পড়াশোনার ক্ষেত্রে নতুন উদ্যম পাবে এবং এর ফলে ড্রপ আউট ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কমবে। যদিও বিদেশের স্কুলগুলিতে এই একই প্রক্রিয়ায় graduation ceremony পালন করার রীতি রয়েছে, তবে এবারে রাজ্যের তরফে সেই একই পদ্ধতিতে রাজ্যের স্কুলগুলিতে graduation ceremony পালন করার নির্দেশিকায় যথেষ্ট খুশি সমগ্র রাজ্যের নাগরিকরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *