বাড়ির ছোট অংশে আদা চাষ করে ইনকাম করুন ২৫,০০০ টাকা
পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ মানুষই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। তবে সময় যতো এগিয়েছে ততোই আধুনিকতার দরুণ অনেকেই কৃষিকাজের থেকে আগ্রহ হারিয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, ভালো ও চাহিদাযুক্ত ফসল চাষাবাদ করে এখনও প্রচুর অর্থ উপার্জন করা যায়। তবে সেজন্য দরকার সঠিক পদ্ধতি ও ভালো রক্ষনাবেক্ষন ব্যবস্থার। আজকের প্রতিবেদনে এরকমই লাভজনক ফসলের চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করবো।
আদা আমরা প্রায় সকলেই খাবারের সাথে খেয়ে থাকি। একাধিক ঔষধি গুন সম্পন্ন এই ফসলের চাহিদাও সবসময় তুঙ্গে। সর্দি, কাশি, জ্বর সাড়াতে এখনও অধিকাংশ বাড়িতে আদা ব্যবহৃত হয়। আপনি সহজেই নিজের জমি, বাড়ি এমনকী বাড়ির ছাদেও এই আদা চাষ করতে পারেন। সঠিক পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে প্রথমবারের চাষেই বহু মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
আদা চাষের সবথেকে সহজ পদ্ধতি হলো বস্তার মাধ্যমে আদা চাষ করা। প্রথমে নিজের আশেপাশের কোনো ব্যক্তি বা দোকান থেকে ১০০ থেকে ২০০ টি বস্তা কিনে নেবেন। একটা বস্তার দাম খুব বেশী হলে ২ টাকা পড়বে। ফলে স্বভাবত অল্প দামেই অনেকগুলো বস্তা কিনে নিতে পারবেন। এরপরের কাজ হলো মাটি জোগাড় করা। আদা চাষের জন্য প্রত্যেক বস্তায় অর্ধেক মাটি দরকার। তাই আপনি যতো বস্তা আদা চাষ করবেন সেই হিসেবে পরিমানমতো উপযুক্ত মাটি জোগাড় করে নেবেন। দোঁয়াশ মাটি আদা চাষের জন্য উপযুক্ত। আদা চাষের জন্য জৈব ও রাসায়নিক উভয় প্রকার সারেরই দরকার। জৈব সারের মধ্যে কম্পোস্ট, গোবর সার, কাঠের গুঁড়ো, নারকেলের ছিবড়া ইত্যাদি জোগাড় করে নেবেন। আপনি বাড়িতেই কিংবা নিকটবর্তী কোনো সারের দোকান থেকে কম্পোস্ট বা গোবর সার জোগাড় করে নিতে পারবেন। সাধারণত দেড়শো-দুশো বস্তা আদা চাষের জন্য ৫ থেকে ৮ বস্তা জৈব সার যথেষ্ট। রাসায়নিক সারের মধ্যে Tabs,পটাশ, ইউরিয়া ইত্যাদি দরকার।
দশম এবং দ্বাদশের পরীক্ষা নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি, জেনে নিন বিস্তারিত
উপরোক্ত সরঞ্জামগুলো জোগাড় করা হয়ে গেলে বাজার থেকে চোখ বেরিয়ে থাকা আদার বীজ কিনে আনবেন। এবার প্রথম কাজ হলো বস্তাগুলো তৈরী করা। চেষ্টা করবেন প্রতিটি বস্তাতে অর্ধেক পরিমান ভরাট করার। প্রতিটি বস্তায় অর্ধেক অংশে ৩/৫ ভাগ মাটি, ১ ভাগ বালি, ১ থেকে ১.৫ ভাগ কম্পোস্ট ও গোবর সার মিশ্রিত জৈব সার এবং তার সাথে কিছুটা রাসায়নিক সার মেশাবেন। পরিমানগত দিক থেকে বললে প্রতিটি বস্তায় প্রায় ৬-৭ কেজি মাটি, ৩-৪ কেজি গোবর সার, বালি ও রাসায়নিক সার মিলিয়ে ১.৫ কেজি ও তার সাথে কিছুটা ছাই ও ধানের তুষ মেশাবেন। এভাবে প্রতিটি বস্তা ভালো করে তৈরী করে নেবেন।
এবার বাজার থেকে কিনে আনা ছোটো আদাগুলোকে ব্যাভিস্টিন বা অন্যকোনো ছত্রাকনাশক দিয়ে ভালো করে পরিশুদ্ধ করে নেবেন। শোধন করা হয়ে গেলে আদাগুলোর যেখান থেকে চোখ বেরিয়েছে সেখান দিয়ে ছুরির মাধ্যমে টুকরো করে কাটতে হবে। এভাবে সমস্ত টুকরোগুলো একটি পাত্রের মধ্যে রাখবেন। তারপরে বস্তার মধ্যে উপরে বর্ণিত পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরী করা মাটি ঢেলে তার মধ্যে এই আদার টুকরোগুলো বসাতে হবে। প্রতিটি বস্তায় চার থেকে পাঁচটি আদার অঙ্কুরিত টুকরো বসাবেন। প্রতিটি বস্তার মধ্যে তিন থেকে চারটি ফুটো করে দেবেন যাতে কোনো কারণে জল জমে গেলে তা বস্তা থেকে সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।
এভাবে প্রতিটি বস্তায় আদা চারা রোপন করে তা আপনার বাড়ির ছাদে বা যেখানে আপনি চাষ করছেন সেখানে বসাবেন। মনে রাখবেন, কম রোদ আদা চাষের জন্য আদর্শ। তাই সবসময় যেখানে রোদ কম হয় এরকম জায়গায় আদা চাষের চেষ্টা করবেন। বর্ষার সময় অতিরিক্ত জল পড়লে আদা গাছ পঁচে যেতে পারে। তাই আদা চাষের জায়গায় অস্থায়ী ছাদ বা ছাউনির ব্যবস্থা করতে পারেন। কমবেশী প্রায় ১০ মাসের মধ্যে আদা গাছ হলুদ হয়ে যাবে এবং তখন আদা গাছগুলো বস্তা থেকে তুলে নিতে হবে।
এবার আদা চাষের ব্যবসা লাভ-ক্ষতি সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। প্রায় ২০০ বস্তা আদা চাষ করতে সবমিলিয়ে কমবেশী ৫,০০০ টাকার মতো খরচ পড়বে। যদি আদা চাষ সঠিকভাবে করা যায় তাহলে প্রতি বস্তায় সহজেই ২ কেজি অবধি আদা উৎপাদন করা যায়। আবার আদার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা। তাই পাইকারি দরে আদা বিক্রি করে আপনি ৩২,০০০ টাকা অবধি উপার্জন করতে পারবেন। ফলে আপনার লাভ হবে কমবেশী ২৫,০০০-২৭,০০০ টাকার মতো। আবার আপনি যদি আদা পাইকারি হারে বিক্রি না করে সরাসরি নিজে বাজারে বিক্রি করেন তাহলে লাভের পরিমান আরও অনেকটা বাড়বে। ফলে বুঝতেই পারছেন, মাত্র ৫,০০০ টাকা খরচ করে আদা চাষের ক্ষেত্রে তেমন কোনো কঠিন পরিশ্রম না করেই আপনি মোটা টাকা লাভ করতে পারবেন।
ওয়াজ মা খুব অসুস্থ ডাক্তারে বলছে ১০০০০ টাকা লাগবে যদি আপনারা দিতেন তাহলে আমার মাকে চিকিৎসা কর নগদ নাম্বার দিলাম বাংলাদেশ