প্রতিদিন ৭ টাকা করে দিয়ে প্রতি বছর হাতে পান ৬০ হাজার টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে আবেদন করুন
বর্তমানে ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকরা যে অর্থনৈতিক মন্দা এবং মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছেন তার কারণে প্রত্যেক নাগরিক এখন তার এবং তার পরিবারের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। আর তাই ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গের জনসাধারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের এবং তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চাইছেন। আর তাই নাগরিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নানাপ্রকার স্কিম থেকে শুরু করে যোজনা কার্যকরী করা হয়েছে যেসমস্ত স্কিম কিংবা পলিসিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে থাকতে পারবেন।
আর আজ আমরা আপনাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকরী এমন একটি যোজনা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি যাতে প্রত্যেকদিন মাত্র ৭ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনারা প্রতিবছর ৬০,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারবেন। এই যোজনাটি অটল পেনশন যোজনা নামে সমগ্র ভারতে বিশেষ পরিচিত। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অনুমোদিত এবং PFRDA দ্বারা পরিচালিত অটল পেনশন যোজনা সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকিমুক্ত একটি স্কিম। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে মূলত দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের নাগরিকদের জন্যই এই প্রকল্পটি কার্যকরী করা হয়েছে। নাগরিকদের যেকোনো দুর্ঘটনা কিংবা রোগ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে এই যোজনা কার্যকরী করা হয়েছে।
এই স্কিমের অধীনে ১৮ বছর থেকে শুরু করে ৪০ বছর বয়সী যেকোনো ভারতীয় নাগরিক বিনিয়োগ করতে পারবেন। এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার যেকোনো ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট কিংবা পোস্ট অফিসে একটি অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। যদিও ২০২২ সালের ১লা অক্টোবর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জানানো হয়েছে যে, যেসমস্ত ব্যক্তিরা কর প্রদান করে থাকেন তারা এই স্কিমের অধীনে আবেদনের যোগ্য নন। এই যোজনার অধীনে একজন বিনিয়োগকারীকে প্রত্যেক মাসে ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন দেওয়া হয়ে থাকে।
তবে বিনিয়োগকারী কতো আমানতের অর্থ এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগ করছেন তার ওপর নির্ভর করছে তিনি কতো টাকা পেনশন হিসেবে পাবেন। এক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারীকে কমপক্ষে ২০ বছরের জন্য এই যোজনার অধীনে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মাসিক, ত্রৈমাসিক অথবা অর্ধবার্ষিক সময়কালের ভিত্তিতে একজন বিনিয়োগকারী তার আমানতের অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিনিয়োগকারীর ৬০ বছর বয়স হলে তবেই তিনি এই যোজনার অধীনে পেনশন পাবেন। তবে ওই সময় যদি কোনো বিনিয়োগকারীর মৃত্যু হয় তবে তার বদলে তার আইনগত উত্তরাধিকারী কিংবা নমিনী ওই পেনশনের টাকা পাবেন।
কিভাবে এই যোজনার অধীনে প্রতি বছর ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব?
কোনো ব্যক্তি যদি ১৮ বছর বয়সে অটল পেনশন যোজনার অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করেন এবং প্রতি মাসে ২১০ টাকা অর্থাৎ প্রত্যেকদিন ৭ টাকা করে যোজনার অধীনে বিনিয়োগ করেন তবে তার ৬০ বছর বয়স হলে তিনি প্রত্যেক মাসে ৫ হাজার টাকা অর্থাৎ বছরের শেষে ৬০ হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন। এক্ষেত্রে তিনি ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ৬২৬ টাকা এবং অর্ধ-বার্ষিক ভিত্তিতে ১২৩৯ টাকা প্রদান করতে পারেন।
কিভাবে এই যোজনার অধীনে আপনি নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন?
অটল পেনশন যোজনার অধীনে নিজের নাম নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে যেকোন নাগরিককে তার নিকটবর্তী পোস্ট অফিস অথবা ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করতে হবে। তবে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য এমন একটি প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছে যার মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকরা বাড়িতে বসেই অনলাইনের মারফত অটল পেনশন যোজনার ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রথমেই একজন নাগরিককে PRAN এর জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর আপনাকে অটল পেনশন যোজনার অধীনে নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং আপনার নিকটবর্তী ব্যাংক অথবা পোস্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।