বন্ধ হতে চলেছে ডুয়াল সিম। এখন থেকে একটি মোবাইলে একটি সিমই চলবে
সময় যতো এগোচ্ছে ততোই বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিগুলির তরফে তাদের গ্রাহকদের পছন্দ অনুসারে নানা ধরনের রিচার্জ প্যাক লঞ্চ করা হচ্ছে। আর গ্রাহকদের পছন্দ অনুসারে রিচার্জ প্যাক লঞ্চ করতে গিয়ে টেলিকম কোম্পানিগুলি পাল্লা দিয়ে তাদের বিভিন্ন ধরনের রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়াচ্ছে। যদিও তাতে গ্রাহকদের কোনো আফসোস নেই, পছন্দসই রিচার্জ প্যাক-এর জন্য অধিকাংশ গ্রাহকই প্রত্যেক মাসে প্রচুর টাকা খরচ করে থাকেন। তবে সমস্যা অন্যদিকে। ইতিপূর্বে যখন রিচার্জ কোম্পানিগুলোর তরফে রিচার্জ প্যাকের দাম কিংবা রিচার্জ প্যাক অনুসারে বৈধতা নির্ধারণ করা হয়নি তখন বহু সংখ্যক মানুষ তাদের সুবিধা অনুসারে বিভিন্ন কোম্পানির সিম নিজের সংগ্রহে রাখতেন।
আর যখন যে যে টেলিকম কোম্পানির তরফে তাদের গ্রাহকদের অধিক সুবিধা সহ রিচার্জ প্যাক লঞ্চ করা হতো তখন সেই নির্দিষ্ট টেলিকম কোম্পানির সিমটি ব্যবহার করতেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের বৈধতা না থাকার কারণে সিমটি অ্যাক্টিভও থাকতো। অনেকেই আবার পার্সোনাল এবং অফিসিয়াল কাজের জন্য আলাদা আলাদা সিম রাখতেন। তবে সময় পাল্টেছে। বর্তমানে ভারত যে অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন তাতে টেলিকম কোম্পানিগুলি নিজেদের লাভ বাঁচাতে যথেষ্ট বেশি দামের রিচার্জ প্যাক লঞ্চ করে থাকে। ইতিপূর্বে ২০২১ সালের শেষের দিকে অর্থাৎ ২০২১ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের দিকে রিলায়েন্স জিও, ভোডাফোন আইডিয়া, এয়ারটেল-এর মতো বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিগুলির তরফে তাদের প্রিপেইড রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানো হয়েছিলো। যার কারণে নিজেদের জনপ্রিয়তাও হারিয়েছিল এই বিখ্যাত টেলিকম কোম্পানিগুলি।
বিগত বছরে বিভিন্ন কোম্পানিগুলির তরফে তাদের ন্যূনতম রিচার্জের দাম ৭৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৯ টাকা করা হয়েছিল। আর এবছরে পুনরায় বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিগুলির তরফে তাদের রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানো হবে, এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বিভিন্ন রিপোর্ট মারফত। বিভিন্ন সূত্রের দাবি চলতি বছরের শেষেই ৯৯ টাকায় রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়িয়ে ১৫৫ টাকা করা হবে এয়ারটেল সহ অন্যান্য কোম্পানিগুলির তরফে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানো হলে নাগরিকরা ওই রিচার্জ প্যাক থেকে যথেষ্ট বেশি সুবিধাও পাবেন। তবে বিগত বছরে রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানোর পর এবছরে পুনরায় বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানির রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ার ইঙ্গিতে যথেষ্টই শোরগোল পড়েছে ভারতীয় জনসাধারণের মধ্যে।
পোস্ট অফিসের এই স্কিমে প্রতিদিন মাত্র ৯৫ টাকা বিনিয়োগ করে ফেরত পেয়ে যান ১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত
এমনকী ভারতের সাধারণ মানুষ এই ১৫৫ টাকার রিচার্জ প্যাকে কেমন রেসপন্স করছে বা রিচার্জ প্যাকটিকে ভারতীয় জনসাধারণ কিভাবে গ্রহণ করছে তা জানার জন্য ইতিমধ্যে এয়ারটেলের তরফে দেশের অন্যতম দুটি পরিচিত সার্কেল বিহার এবং হরিয়ানায় ৯৯ টাকার রিচার্জ প্যাকের বদলে ১৫৫ টাকা রিচার্জ প্যাক কার্যকরী করা হয়েছে। অর্থাৎ চলতি বছরেই এই দুটি সার্কেলে এয়ারটেলের রিচার্জ প্যাকের দাম ৫৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সমীক্ষার তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ১৫৫ টাকার রিচার্জ প্যাক ভারতীয় জনসাধারণ কিভাবে গ্রহণ করবে তার ওপর নির্ভর করে এয়ারটেলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সমগ্র দেশে এই রিচার্জ প্যাকটি কার্যকরী করা যাবে কিনা। সুতরাং, আগামী দিনে সমগ্র ভারতজুড়ে ৯৯ টাকার রিচার্জ প্যাকেট বদলে ১৫৫ টাকার এই রিচার্জ প্যাকটিও কার্যকরী করা হতে পারে।
আর বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানিগুলির রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানোর কারণে ডুয়াল সিম বা সেকেন্ডারি সিমের পরিমাণ কমিয়ে ফেলছে ভারতীয় নাগরিকরা। ইতিপূর্বে যখন এই টেলিকম কোম্পানিগুলির তরফে রিচার্জ প্যাক অনুসারে বৈধতা নির্ধারণ করা হয়নি কিংবা ন্যূনতম রিচার্জ প্যাকের দামও এতো বেশি ছিল না তখন মানুষ প্রচুর পরিমানে সেকেন্ডারি সিম রাখতে অভ্যস্ত ছিলেন। অধিকাংশ মানুষেরই একাধিক সিম না থাকলেও তারা ডুয়াল সিমের সুবিধা ভোগ করতেন। তারা নিজেদের সুবিধা অনুসারে এই সমস্ত সিমগুলি ব্যবহার করতে পারতেন।
তবে বর্তমানে যেভাবে রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানো হচ্ছে তাতে করে দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছেই ডুয়াল সিম রাখা সুখস্বপ্ন মাত্র। এর পাশাপাশি অধিকাংশ টেলিকম কোম্পানির রিচার্জ প্যাকগুলি প্রায় একই ধরনের, কিছুক্ষেত্রে সুবিধার হেরফের হলেও অধিকাংশ টেলিকম কোম্পানির রিচার্জ প্যাকগুলির মারফত প্রায় একই ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন নাগরিকরা। আর তাই খুব শীঘ্রই ডুয়াল সিম মানুষের মধ্যে থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলেই জানা গিয়েছে বিভিন্ন সমীক্ষার তরফে। বর্তমানেও বহু সংখ্যক গ্রাহকের কাছে দুই বা তার বেশি কোম্পানির সিমকার্ড রয়েছে। তবে টেলিকম কোম্পানিগুলির তরফে ক্রমাগত হারে তাদের রিচার্জ প্যাকের দাম বাড়ানো হলে খুব শীঘ্রই এই সিমগুলির ব্যবহারও বন্ধ করবেন গ্রাহকরা। সুতরাং আগামী দিনে টেলিকম কোম্পানিগুলির এই সিদ্ধান্তের ফলে ডুয়াল সিমের পাশাপাশি তাদের গ্রাহকের সংখ্যাও কমবে।