Google Pay, PhonePe এর মাধ্যমে আর করা যাবে না যতখুশি লেনদেন, নতুন সীমা বেঁধে দিল RBI
করোনার সময় থেকেই সমগ্র ভারতের মানুষ অনলাইন পেমেন্ট এবং বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের সাক্ষী থেকেছে। আর বর্তমানে পরিস্থিতির স্বাভাবিক হলেও সমগ্র ভারতে জনসাধারণ ক্রমান্বয়ে গুগল পে, ফোন পে কিংবা পেটিএম এর মতো অ্যাপগুলির মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করছেন। বলাই বাহুল্য আগের তুলনায় এই সমস্ত অ্যাপগুলির মাধ্যমে অনলাইন ট্রান্সফারের পরিমাণ আরও বেড়েছে। ইতিমধ্যেই এক রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, বিগত মাসে অর্থাৎ অক্টোবর মাসে পুজোর সময় Unified Payments Interface বা UPI এর মাধ্যমে ১২.১১ লক্ষ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে যে, পুজোর সময় অর্থাৎ অক্টোবর মাসে প্রায় ৭৩০ কোটি লেনদেন করা হয়েছে গুগল পে, ফোন পে, পেটিএম এর মত অ্যাপগুলির মাধ্যমে। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে UPI এর মাধ্যমে লেনদেনের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬৭৮ কোটি। এমনকি সেপ্টেম্বর মাসেও ভারতীয় জনসাধারণের মাধ্যমে ইউপিআই এর মারফত ১১. ১৬ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
গুগল পে, ফোন পে কিংবা পেটিএম এর মতো অ্যাপগুলির মাধ্যমে লেনদেনের এই সংখ্যা নজরে আসতেই রীতিমতো টনক নড়েছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এর। আর এবারে এই সমস্ত অ্যাপগুলির মাধ্যমে টাকা লেনদেনের উপরে রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা NPCI। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে থার্ড পার্টি অ্যাপ প্রোভাইডার বা TRAP এর বিষয়টি মাথায় রেখেই এরূপ পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হয়েছে NPCI। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, আগামী দিনে এই ইউপিআই এর মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের অ্যাপগুলির লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ NPCI। এমনকি NPCI এর তরফে এও প্রস্তাব রাখা হয়েছে যে, আগামী দিনে ইউপিআই এর মাধ্যমে লেনদেনের যে থার্ড পার্টি প্রোভাইডার অ্যাপ করে রয়েছে সেগুলির লেনদেনের মোট সীমা ৩০ শতাংশ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হবে।
মনে করা হচ্ছে NPCI এর তরফে চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ দিকেই এ বিষয়ে একটি পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই National Payments Corporation of India তরফে বারংবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সাথে বৈঠকের আয়োজন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, বর্তমানে অনলাইনে UPI এর মারফত ফোন পে, গুগল পে, পেটিএম এর মত যে অ্যাপগুলি রয়েছে সেগুলিতে টাকা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোন সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। অর্থাৎ এই অ্যাপগুলির মারফত যত খুশি পেমেন্ট করা সম্ভব। আর এই কারণে অ্যাপগুলির জনপ্রিয়তার পাশাপাশি শেয়ারও বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। আর তাই এই সমস্ত থার্ড পার্টি ইউবিআই অ্যাপগুলির জনপ্রিয়তা ও দাপট খানিকটা কমাতে এবং ঝুঁকি এড়াতে NPCI এর তরফে এই থার্ড পার্টি ইউপিআই অ্যাপগুলির লেনদেনের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
ইতিপূর্বে NPCI এর তরফে যে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে NPCI এর আধিকারিকরা ছাড়াও RBI এর আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এমনকি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খোদ অর্থ মন্ত্রকের আধিকারিকরা। এই বৈঠকে আগামী দিনে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য এবং সম্ভাবনাগুলি যাচাই করে দেখা হয়েছে। যদিও এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন ইন্ডাস্ট্রির স্টেক হোল্ডাররা। আর তাই ইন্ডাস্ট্রির স্টেক হোল্ডারদের তরফে NPCI এর কর্তৃপক্ষের কাছে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। যদিও ৩১ শে ডিসেম্বরের এই সময়সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আরে তাই ওয়াকিবহাল মহলের কর্তা ব্যক্তিদের দাবি, চলতি মাসের অর্থাৎ নভেম্বর মাসের শেষ দিকেই UPI মার্কেট ক্যাপ বাস্তবায়নের ব্যাপারে যেকোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে NPCI। যদিও এখনও পর্যন্ত NPCI এর তরফে এই ব্যাপারে অফিসিয়ালি কোনোরকম তথ্য জানানো হয়নি। তবে NPCI এর তরফে আগামী দিনে এ ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা জানতে উন্মুখ হয়ে রয়েছেন শেয়ারবাজারে স্টেক হোল্ডার থেকে শুরু করে সমগ্র দেশবাসী।