প্রকল্প

বছরের শেষে এই ৮ প্রকল্পের টাকা পেতে চলেছেন আপনি। কোন কোন প্রকল্প জেনে নিন

ডিসেম্বর মাসে এই ৮ টি প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেতে চলেছেন কৃষকরা।

পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের জন্য রয়েছে এক দারুণ সুখবর। এই ডিসেম্বর মাসেই তারা কৃষক বন্ধু প্রকল্প সহ আরও অন্যান্য ৭ টি প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেয়ে যেতে চলেছেন। ইতিমধ্যে এই খবর প্রকাশ্যে আসায় ডিসেম্বর মাসে কৃষকরা কোন কোন প্রকল্পে টাকা পেতে চলেছেন তা জানতে রীতিমতো উৎসুক রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গবাসী কৃষক সহ পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকরা।

এই ডিসেম্বর মাসে কৃষকরা যে প্রকল্পগুলিতে টাকা পেতে চলেছেন তার মধ্যে প্রথমে আসে কৃষক বার্ধক্য ভাতার নাম। পশ্চিমবঙ্গবাসী যেসমস্ত কৃষকের বয়স বর্তমানে ৬০ বছর কিংবা তার বেশি এবং যারা নানারকম শারীরিক অক্ষমতার কারণে বর্তমানে আর কৃষিকাজ করতে পারেন না অথবা কৃষিকাজ করেন না, তাদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কৃষক বার্ধক্য ভাতা প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। কৃষক বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কৃষকদের প্রতিমাসে ১০০০ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। সুতরাং, অন্যান্য মাসের মতো ডিসেম্বর মাসেও কৃষক প্রকল্পের অধীনে ১০০০ টাকার অনুদান পেয়ে যাবেন।

প্রচুর সংখ্যক শূন্যপদে ক্লার্ক ও গ্রুপ-ডি পদে কর্মী নিয়োগ। আবেদন করুন এখনই

কৃষক বার্ধক্য ভাতার পাশাপাশি কৃষকরা এই চলতি মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অধীনেও অনুদান পেতে চলেছেন। সাধারণত কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অধীনে কৃষকদের কৃষিকাজে সাহায্য করার জন্য সাধসাধারণত ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রেই কৃষকরা ৩ লক্ষ টাকার বেশিও পেয়ে যেতে পারেন, তবে একজন কৃষক কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অধীনে কতো টাকা পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে কৃষকের পরিবারের ওপর। ইতিপূর্বে যারা এই প্রকল্পের আওতায় ঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন চলতি মাসে তাদের এই প্রকল্পের আওতায় টাকা দেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।

এর পাশাপাশি জানা গিয়েছে যে, এই ডিসেম্বর মাসে কৃষকরা প্যাডি পারচেজ প্রকল্পের অধীনেও টাকা পেতে চলেছেন। প্যাডি পারচেজ প্রকল্পে কৃষকরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধান বিক্রি করে যথেষ্ট টাকা পেয়ে যেতে পারেন। যদিও এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকরা কতো টাকা পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে কৃষকদের জমিতে উৎপন্ন হওয়া ধানের উপর। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যেসমস্ত প্যাডি প্রোকিওরমেন্ট সেন্টার রয়েছে সেই সমস্ত সেন্টারগুলিতে কৃষকরা ছুটির দিন বাদে যেকোনো দিনে নির্ধারিত সময়ে গিয়ে ধান বিক্রি করে আসতে পারেন। ইতিপূর্বে যারা এই প্রকল্পের অধীনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ধান বিক্রি করেছিলেন তারাই ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের আওতায় টাকা পেয়ে যাবেন।

ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষকদের ফসল নষ্ট হলে যাতে কৃষকদের যাতে ক্ষতির সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বাংলা শস্য বীমা প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের রবি মরসুম এবং খারিফ মরসুমে অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। যারা ইতিপূর্বে এই প্রকল্পের অধীনে শস্য বিমার জন্য আবেদন করেছিলেন এবং যাদের ফসল দুর্যোগের কারণে নষ্ট হয়েছে সেসমস্ত কৃষকরা এই ডিসেম্বর মাসেই প্রকল্পের অধীনে টাকা পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও জানা গিয়েছে যে, এই চলতি মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসে কৃষকরা কৃষি যন্ত্রায়ন প্রকল্পের অধীনে টাকা পেতে চলেছেন। এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সরকারের তরফে ওই যন্ত্রপাতির দামের অর্ধেক মূল্যকে দেওয়া হয়ে থাকে। তবে এই অনুদান পাওয়ার জন্য কৃষকদের প্রথমে সম্পূর্ণ দাম দিয়ে যন্ত্র কিনে নিতে হয়, তারপর সরকারের তরফে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরকারের ওই যন্ত্রগুলির দামের অর্ধেক মূল্য ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়ে থাকে। ইতিপূর্বে এই প্রকল্পের অধীনে আবেদনের প্রক্রিয়া কার্যকরী করা হয়েছিলো। যেসকল কৃষকরা এই প্রকল্পের অধীনে আবেদন জানিয়েছিলেন তাদের এই ডিসেম্বর মাসে অনুদান দেওয়া হবে বলেই জানানো হয়েছে।

বাংলা কৃষি সেচ যোজনার অধীনেও এই ডিসেম্বর মাসে কৃষকরা টাকা পেতে চলেছেন। কৃষকদের চাষের ক্ষেত্রে সব থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসটি হলো জলসেচ। কৃষকরা যাতে সেচকার্যের মাধ্যমে নিজেদের কৃষি জমিতে সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় জল দিতে পারেন তার জন্য বাংলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই যোজনার অধীনে অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এই যোজনার অধীনে কৃষকের সর্বনিম্ন ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়ে যেতে পারেন। তবে একজন কৃষক কতো টাকা পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে ওই কৃষকের জমির পরিমাণের ওপর।

কৃষকদের কৃষিকাজে সহায়তা করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে কৃষক বন্ধু প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। বাংলার সমস্ত কৃষকরা যাতে কৃষিকাজে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশকের মতো জিনিসগুলি কিনতে পারে এবং কৃষিকাজের জন্য কোনোভাবেই তাদের ঋণগ্রস্ত না হতে হয় তা নিশ্চিত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে কৃষকবন্ধু প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের বছরে দু’বার ২০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত প্রদান করা হয়ে থাকেথাকে। তবে এই প্রকল্পের অধীনে একজন কৃষক কত টাকা পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে উক্ত কৃষকের জমির পরিমাণের ওপর।

এর পাশাপাশি কৃষকবন্ধু প্রকল্পের অধীনে নাম নথিভুক্ত রয়েছে এমন কৃষকের মৃত্যু ঘটলেও ওই কৃষকের পরিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফে ২ লক্ষ টাকার সাহায্য পেয়ে যাবেন। এই প্রকল্পটি কৃষকবন্ধু ডেথ বেনিফিট নামে পরিচিত। সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেসমস্ত কৃষকের নাম কৃষকবন্ধু প্রকল্পের অধীনে নথিভুক্ত রয়েছে তাদের মারা যাওয়ার তিন মাসের মধ্যে ওই কৃষকের ডেথ সার্টিফিকেট সহ এই প্রকল্পের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানালে কৃষকের পরিবার কিংবা আইনসম্মত উত্তরাধিকারীকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাহায্য করা হয়ে থাকে। ইতিপূর্বে যারা এই প্রকল্পের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তারা চলতি মাসে প্রকল্পের অধীনে অনুদান পাবেন বলে জানানো হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *