ট্রেন্ডিং

টেট নিয়ে ১৬ দফা গাইডলাইন প্রকাশ করলো স্কুল শিক্ষা দপ্তর। না মানলে পরীক্ষা বাতিল

প্রাথমিক টেট নিয়ে নানারকম ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে প্রথম থেকেই প্রাথমিক টেটের পরীক্ষা নিয়ে নানাবিধ আশঙ্কা ছিলো। ইতিপূর্বে প্রাথমিক টেটের পরীক্ষা পদ্ধতি এবং ফলাফল নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। যদিও পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি শ্রী গৌতম পাল মহাশয় টেট সম্পর্কিত সমস্ত দায়িত্বগুলি গ্রহণ করার সাথে সাথেই চাকরিপ্রার্থীদের কথা দিয়েছিলেন যে, আগামী দিনে যেসমস্ত টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে সেগুলি সমস্ত নিয়ম মেনে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গেই নেওয়া হবে। আগামী ১১ই ডিসেম্বর টেট পরীক্ষা। রাজ্যজুড়ে প্রায় ১৪০০ পরীক্ষা কেন্দ্রে চাকরিপ্রার্থীরা পরীক্ষা দেবেন। আর তাই এই সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে সরকারি কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে।

আর এই পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় এবং যথেষ্ট নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে তারা পরীক্ষা দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতেই পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এক ১৬ দফার গাইডলাইন প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। তবে এই গাইডলাইনগুলি প্রকাশ্যে আনার পরও ক্ষান্ত হয়নি রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর। প্রত্যেকটি জেলার জেলা শাসক এবং কলকাতা পুলিশের পুলিশ কমিশনারকে পর্যন্ত এই ১৬ দফার গাইডলাইনগুলি পাঠানো হয়েছে। এই গাইডলাইনে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে, প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেও মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের অনুরূপ নিয়মাবলী কার্যকর করা হবে। এই গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সমগ্র রাজ্যের ১৪৫৩ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।

এই ১৪৫৩ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে সর্বমোট ৬ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৩১ জন চাকরিপ্রার্থী। ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টা থেকে শুরু করে দুপুর ২ টা ৩০ পর্যন্ত মোট আড়াই ঘণ্টায় ১৫০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে চাকরিপ্রার্থীদের। এই গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে যে, প্রত্যেকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে এক্সটেনশন অফিসার পর্যায়ের পুলিশ আধিকারিককে নিয়োগ করতে হবে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই টেটের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতেও জারি করা হবে ১৪৪ ধারা। পরীক্ষা চলাকালীন একাধারে যেমন লাউড স্পিকার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই জেরক্সের দোকানগুলিকেও বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই গাইডলাইনে চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে মোবাইল, ব্লুটুথ স্পিকার, ট্যাবলেট-এর মতো কোনোরকম ইলেকট্রনিক্স গেজেট সহকারে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পর্যাপ্ত পানীয় জল এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই টেটের ক্ষেত্রেও পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র পৌঁছানোর পূর্বেই পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকী চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্য পরীক্ষার দিনে পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যবস্থা রাখার দিকেও নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই ১৬ দফার গাইডলাইনে।

ইন্টারনেট ছাড়াও করা যাবে UPI ট্রানজেকশন, কিভাবে করবেন জেনে নিন

এমনকী যেকোনো বিশেষ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের মোতায়েন করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। যেকোনো পরীক্ষার্থীর কোন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা হলে তাকে যাতে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্যই স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের মোতায়েন করা হচ্ছে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলের তরফে। ঐদিন যাতে কোনোভাবেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা না হয় তার জন্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকদেরও বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকী অগ্নি সুরক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা বিশেষভাবে সতর্ক থাকেন।

এছাড়াও জেলা প্রশাসনের তরফে প্রত্যেকটি স্কুল, কলেজের প্রধান শিক্ষক কিংবা প্রিন্সিপালের সাথে আগে থেকে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে পরীক্ষার আয়োজনের জন্য কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপদ্ধতি বিঘ্নিত না হয়। তবে এখানেই শেষ নয়, পরীক্ষার্থীরা যাতে সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন তার জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থার উপরেও বিশেষভাবে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। মনে করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে এই গাইডলাইন সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করা হবে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *