ওয়াইফাই রাউটার ব্যবহার করছেন? অজান্তেই শরীরে দানা বাঁধছে মারণরোগ, বিশেষজ্ঞদের কি মত?
ওয়াইফাই রাউটার ব্যবহার করছেন? বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড়িতে বসে নিমেষেই সব প্রশ্নের উত্তর সহজেই পাওয়া যায়। এমনকি অফিসের কাজও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরে বসেই করা সম্ভব। বিশেষত অতিমারীর প্রভাব এবং লকডাউন ব্যবস্থায় ওয়ার্ক ফ্রম হোম আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। কিন্তু জানেন কি নিজের অজান্তেই ঘরের এই জিনিসটি বাড়াচ্ছে কঠিন অসুখের সম্ভাবনা। সময় থাকতে জেনে নিন। নাহলে হয়তো ভবিষ্যতে আপনাকেই ভুগতে হতে পারে। কিভাবে কমাবেন এই জিনিসের ব্যবহার?
ওয়াইফাই রাউটার থাকলে অবশ্যই মানুন এই নিয়ম গুলি।
আজকে এই প্রতিবেদনে ওয়াইফাই রাউটারের ব্যবহারে কোন কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা জানানো হবে। অতিমারীর আবহে অফিসে গিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মীদের কাজে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমানে অনেক কর্মী ওয়ার্ক ফ্রম হোম করে চলেছেন। সমস্যা সেখানেই। অনেক বাড়িতেই দেখা যায় ড্রয়িং রুমের দেয়ালে বা বেডরুম লাগানো রয়েছে নানা প্রকারের রাউটার। যাতে করে স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কি মত?
ওয়াইফাই রেডিয়েশন বা রেডিওফ্রিকুয়েন্সি রেডিয়েশন হল এক প্রকার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন। এই রেডিয়েশন শরীরের উপর মারাত্মক বাজে প্রভাব ফেলে। তার উপর যদি ওয়াইফাই রাউটার শোয়ার ঘরে বা বিছানা খুব কাছকাছি রাখা হয়ে থাকে, অবশ্যই দ্রুত স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটবে। ২০১১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ‘আর এফ’ রেডিয়েশনকে গ্রুপ ২বি পসিবেল হিউমেন কার্সিনোজেন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এর ফলে কোন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে?
WHO এর তরফে জানানো হয়েছে, এই যন্ত্রের রেডিয়েশনের ফলে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এমনকি এই রেডিয়েশন দেওয়াল ভেদ করেও শরীরের উপরে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আর যদি ঘরে ছোটো বাচ্চা থাকে, তাহলে এই বিষয়ে আগে থেকেই সচেতন হওয়া দরকার।
কোন কোন রোগ হতে পারে?
১) বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা বাড়ে-
গবেষণা অনুসারে, টানা ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ওয়াইফাই রাউটারের থেকে কম দূরত্বে অবস্থান করলে স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাছাড়া এর রেডিয়েশন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যাতে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হতেই পারে। তাই আগে থাকতেই সচেতন হন।
২) ঘুম আসতে দেরি হয়-
বিশেষজ্ঞদের মতে, শোয়ার ঘরে ওয়াইফাই রাউটার থাকলে ঘুমের আসতে দেরি হয়। আর আমরা সকলেই জানি, পর্যাপ্ত খাওয়া এবং ঘুম দুটোই শরীরের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। যদিও ‘RF’ রেডিয়েশনের প্রভাবে শরীরে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। তার জন্যই ঘুম কমে যায়। বহুদিন ধরে এই সমস্যা হতে থাকলে ইনসোমনিয়ার রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তার থেকে বেড়ে যায় ছোট-বড় নানা রোগের আশঙ্কা।
৩) সেল ডেথের সম্ভাবনা থাকে-
আমরা সকলেই জানি, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন অংশে বহু কোষের মৃত্যু ঘটে থাকে। কিন্তু এই সমস্যা যদি প্রযুক্তি ব্যবহারে হয়ে থাকে, তাহলে শরীরে মারণরোগ দানা বাঁধতে পারে। বহু গবেষণায় জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ওয়াইফাই ব্যবহারের ফলে কোষের মৃত্যু বা সেল ডেথের আশঙ্কা বাড়ে। এরফলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর যদি শোয়ার ঘরে ওয়াইফাই রাউটারের থাকে, তাহলে আরো বিপদ।
৪) দেহে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে যায়-
এই রেডিয়েশনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে করে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। তবে মোবাইল স্ক্রিনের ব্যবহারেও এই আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষত, স্ক্রিনের নীল আলো, ওয়াইফাই রেডিয়েশনের মতোই কাজ করে। এর ফলে শরীরে মেলাটোনিনের ক্ষরনে বাঁধা পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমতে যাওয়ার কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
কিভাবে এই সমস্যা থেকে বাঁচা যাবে?
১) ঘুমতে যাওয়ার আগে রাউটার বন্ধ করতে হবে। ইচ্ছে হলে স্মার্ট প্লাগ ব্যবহার করে দূর থেকেই রাউটার অন-অফ করা যেতে পারে। এর ফলে ’RF’ রেডিয়েশনের নেতিবাচক প্রভাব কমবে।
২) শোয়ার ঘরের থেকে কমপক্ষে ২৫-৩৫ ফিট দূরত্বে রাউটার রাখা প্রয়োজন।
সর্ষের তেল সহ সস্তা হল আরও অনেক খাদ্য দ্রব্য, দেখে নিন তালিকা।
৩) বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে ‘Wifi 6’ রাউটার ব্যবহার আগের তুলনায় বেড়েছে। যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম। তাই শোয়ার ঘরে একদমই এটি রাখা চলবে না। তাছাড়া দিনের বেশিরভাগ সময় রাউটারের সামনাসামনি না কাটানোই ভালো।
৪) দামি ওয়াইফাই রাউটার ব্যবহার করতে হবে। এতে সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে।
৫) ওয়াইফাই রেডিয়েশনের প্রভাব কমাতে সকালে খালি পায়ে ঘাসে হাঁটার অভ্ভাস করতে হবে।
এই সংক্রান্ত নতুন আপডেট সবার আগে পেতে হলে এই ওয়েবপোর্টালটি ফলো করতে ভুলবেন না।