বাংলার শিক্ষক নিয়োগ (TET Scam) দুর্নীতির আঁচ এবার ছড়িয়ে পড়লো প্রতিবেশী রাজ্য অসমে (Assam). সেই রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গিয়ে যে সমস্ত শিক্ষকেরা শিক্ষকতা করছেন, তাদের সার্টিফিকেট যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম সরকার (Government Of Assam). আর সেই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে শিক্ষা মহলের একাংশ এর নেপথ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন। ইতি মধ্যেই অসমের শিক্ষামন্ত্রী (Education Minister Of Assam) হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য জানানো হয়েছে।
TET Scam Spreads In Assam.
পশ্চিমবঙ্গের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা বি এড (B Ed) এবং ডি এল এড (D El Ed) প্রশিক্ষণ নিয়ে অসমের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, তাদের নথিপত্র যাচাইয়ের কাজ শুরু হবে। অসমের শিক্ষামন্ত্রী রণজ পেগুর কথা অনুযায়ী, বেশ কিছু ভুয়ো সার্টিফিকেট দাখিল (TET Scam) করে চাকরির অভিযোগ এসেছে। সেই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। তবে একেবারে লাখ লাখ শিক্ষকের সার্টিফিকেট যাচাই (Teachers Certificate Verification in Assam) করা সম্ভব নয়।
তাই যে সমস্ত সার্টিফিকেট (B.Ed, D.El.Ed Certificate) দেখে সন্দেহ হচ্ছে, সেগুলোই যাচাই করা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের একটা তালিকা তৈরি করে নথিপত্র যাচাই করা হবে। গরমিল পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের চাকরি চলে যাবে। আর এরপরেই যে প্রশ্নটি উঠে আসছে, তাহলে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) থেকে যারা বিএড বা ডি এল এড (TET Scam) প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাদের সার্টিফিকেট কেন যাচাই করা হচ্ছে? জবাবে অসমের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ শুধু নয়।
অসমে কর্মরত শিক্ষকদের এবারে কি হতে চলেছে?
যাদের সার্টিফিকেট নিয়ে সন্দেহ হবে তাদের প্রত্যেকের এই নথি যাচাই করা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রশিক্ষণ যারা নিয়েছেন, তাদের বেশি সন্দেহের কারণ রয়েছে। কারণ তাদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ বা তারও বেশি নম্বর অনেকের রেজাল্টে দেখা যাচ্ছে। তাই সবটা তদন্ত করা হচ্ছে। অসমের শিক্ষা দপ্তর (Assam Education Department) 1 আগস্ট থেকে নির্দেশিকা জারি করে বিএড এবং ডি এল এড এর এই ভুয়ো সার্টিফিকেট (Fake Certificate) যাচাইয়ের কাজ শুরু করছে (TET Scam In WB).
অভিযোগ উঠেছে, অসমে প্রাথমিক (Primary Education) এবং মাধ্যমিকস্তরের (Secondary Education) স্কুলে বহু যুবক যুবতী B.Ed এবং D.El.Ed এর ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরিতে ঢুকেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে (Assam CM Office) সেই সংক্রান্ত বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। আর তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Assam CM Hemant Biswasharma) বিষয়টিতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে অসমের শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, বহু শিক্ষকের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, তারা অসমে ছিলেন, কিন্তু সার্টিফিকেট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেগুলার কোর্সে বিএড বা ডি এল এড করেছেন। এরপরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পরীক্ষায় বসতে হলে ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি দরকার। তাহলে অসমে বসবাস করে তারা পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে রেগুলার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিলেন? কিভাবেই বা ক্লাস করলেন? পরীক্ষাই বা কিভাবে দিলেন? আর এই কারণেই দুর্নীতির (TET Scam) বিষয়টি আরো স্পষ্ট হচ্ছে।
আর এর ফলে বাংলাতে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গের বহু বাসিন্দা অসমের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বিভিন্ন বিএড কলেজের অধ্যক্ষরা অভিযোগ করছেন, বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিচু করে দেখানোর জন্যই অসম সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সার্টিফিকেট যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে। উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ বিএড কলেজ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University Of North Bengal) নিয়ন্ত্রণে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেন, সার্টিফিকেট যাচাই সংক্রান্ত (TET Scam) কোনো চিঠিপত্র এখনো আসেনি।
TET Scam নিয়ে অসম সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কি?
এলে পদ্ধতি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষামহলের অধিকাংশই এই প্রশ্নও তুলেছেন, উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ সহ বহু রাজ্যের বিএডের সার্টিফিকেট নিয়ে বহু মানুষ শিক্ষকতা করছেন। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যারা ডিগ্রী নিয়ে শিক্ষকতা করছে অসমে, তাদেরকে কেন বেছে বেছে যাচাইয়ের কাজ করা হচ্ছে?
DA Hike – অবশেষে সরকারি কর্মীদের জন্য ডিএ বৃদ্ধি সহ একগুচ্ছ ঘোষণা সরকারের, সিদ্ধান্তে খুশি সকলে।
এই প্রসঙ্গে ময়নাগুড়ি বিএড কলেজের অধ্যক্ষ জানান, সার্টিফিকেট যাচাইয়ের নামে অসম সরকার শিক্ষকদের হয়রান করছে। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। যেভাবে শুধু পশ্চিমবঙ্গকে টার্গেট করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু অনেকের মতানুসারে, পশ্চিমবঙ্গে যেইভাবে টেট দুর্নীতি (Primary TET Scam) লক্ষ করা যাচ্ছে সেই জন্য অসম সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Pension – প্রতিদিন মাত্র 2 টাকা করে জমিয়ে মাস শেষে পেয়ে যান নগদ 3000 টাকার পেনশন, কীভাবে জানুন।