ভারতে বর্তমানে রান্নার গ্যাস অর্থাৎ LPG (Liquefied Petroleum Gas) সঙ্কট বিষয়টি সমাজ ও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সংকোচনে পরিণত হচ্ছে। একদিকে বাড়ন্ত চাহিদা, অন্য দিকে আমদানি সংকুচিত হওয়ায়, হঠাৎ কোনো সময়ে গ্রাহকরা পেতে পারেন “LPG সিলিন্ডার পাওয়া যাবে না” ধরনের সতর্ক বার্তা। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এসব সমস্যা নিরাময়হীন নয় তবে বর্তমানে পরিস্থিতি বেশ সংকটাপন্ন।
LPG গ্যাস নিয়ে চিন্তা বাড়ছে কেন?
ভারতে প্রায় ৩৩ কোটি পরিবার বর্তমানে রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহার করছে। সরকারিভাবে দেওয়া ভর্তুকি আরও অনেকের আগ্রহ তৈরি করেছে। ভারতের এলপিজি আমদানির বড় অংশ আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলো থেকে বিশেষ করে ইরান, সৌদি আরব ও ইরাক থেকে কিন্তু যুদ্ধের কারণে এই দেশ গুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে সরবরাহে প্রভাব পড়া অস্বাভাবিক নয়।
বর্তমানে দেশীয় মজুদ মাত্র ১৫ – ১৬ দিনের তীব্র চাহিদা মেটাতে সক্ষম। যদি হঠাৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়, তাহলে সংকট তৈরি হতে পারে। ভারতে বর্তমানে মাত্র প্রায় ১.৫ কোটি পরিবার প্রাকৃতিক গ্যাস (LPG) ব্যবহার করে। দেশের অধিকাংশ জায়গায় পাইপ লাইন অবকাঠামো অনুপস্থিত এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
শুধু LPG নয়, পেট্রোল ও ডিজেলের মজুদ অনেকটাই ভালো প্রায় ৭৪ দিনের চাহিদা মেটানোর মতো রিজার্ভ রয়েছে। তাই ওই খাতে এতটা উদ্বেগ নেই। গ্যাস মজুদের সংকট ও সরবরাহ হ্রাসের সম্ভাবনা থাকায় দাম বাড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তবে এখনই বড়সড় দাম বৃদ্ধির কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমান মজুদ পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে দামের বড়সড় পরিবর্তন হবে না।
তবে, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা দীর্ঘ হলে গ্যাস সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং এর প্রভাব গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে যাতে তারা বিকল্প জ্বালানি যেমন বৈদ্যুতিক কুকার, ইনডাকশন হিটিং ইত্যাদি ব্যবহার বিবেচনা করেন, বিকল্প উৎস হিসেবে রাশিয়া, আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়া থেকে LPG আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে।
100 ও 200 টাকার নোট নিয়ে RBI বড় নির্দেশ দিলো কোটি কোটি আমজনতার জন্য
উপসংহার
বর্তমান LPG সঙ্কট যদিও একটি সম্ভাব্য অস্থায়ী সমস্যা, কিন্তু এটি আমাদের জ্বালানি ব্যবস্থার উপর নির্ভরতার বিষয়টি সামনে এনে দিয়েছে। সরকার ও গ্রাহক এক সঙ্গে কাজ করলে বিকল্প শক্তি ব্যবহার বাড়িয়ে ভবিষ্যতের সঙ্কট এড়ানো সম্ভব।