রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের জন্য চালু হলো দুই নতুন প্রকল্প। আবেদন করুন এখনই
নতুন বছরে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত নাগরিকের জন্য রয়েছে এক দারুণ সুখবর। ২০২৩-এর শুরুতেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে দুটি নতুন প্রকল্প কার্যকরী করা হলো। ইতিপূর্বেই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল যে, ২রা জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এই প্রকল্প দুটি সম্পর্কে বিশদে সমস্ত তথ্য জানানো হবে। আর ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফেই প্রকল্প দুটি সম্পর্কে সমস্ত কিছু প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক রাজ্য সরকারের তরফে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের জন্য কোন দুটি বিশেষ প্রকল্প কার্যকরী করা হলো-
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকদের সুবিধার জন্য যে দুটি নতুন প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে সেই দুটি কর্মসূচি আগামী দিনের রাজ্য জুড়ে দিদির সুরক্ষা কবচ এবং দিদির দূত নামেই পরিচিতি পাবে। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী প্রায় ২ কোটি পরিবার আগামী দিনে রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী ১৫ টি প্রকল্পের সুবিধা নিশ্চিত রূপে পাচ্ছেন কিনা তা নিশ্চিত করা হবে দিদির সুরক্ষা কবচ প্রকল্পের মাধ্যমে।
আর এই কাজে রাজ্যের সাধারণ মানুষের সহায় হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সাড়ে তিন লক্ষ কর্মী। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যেকোনো পরিবারের সদস্যরা রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকারী সমস্ত প্রকল্পগুলির সুবিধা সঠিকভাবে পাচ্ছেন কিনা তা নিশ্চিত করবেন এই সমস্ত কর্মীরা। আর এই কর্মীরাই দিদির দূত নামে পরিচিত। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ নাগরিকরা যাতে সঠিকভাবে সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা পান তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দিদির দূত নামক একটি অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছে।
আবাস যোজনা থেকে আবারও বাদ পড়লো ১ লাখ ১৭ হাজার উপভোক্তার নাম। আপনার নাম রয়েছে তো?
পশ্চিমবঙ্গবাসী যেকোনো সাধারণ মানুষই গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপটি পেয়ে যাবেন। এই অ্যাপে রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী সমস্ত প্রকল্পগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্যবাসী যাতে এই সমস্ত প্রকল্পের অধীনে আবেদন জানাতে পারেন এবং নিজেদের অধিকার নিজেরাই বুঝে নিতে পারেন তার জন্যই এই অ্যাপটি কার্যকারী করা হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, দিদির সুরক্ষা কবজের অধীনে ৬ টি ক্ষেত্রের ১৫ টি প্রকল্প সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে রাজ্য সাধারণ মানুষকে। এই ক্ষেত্রগুলি হল:-
১. দিদির সুরক্ষা কবজের অধীনে প্রথম যে বিষয়টি স্থান পেয়েছে তা হল সামাজিক সুরক্ষা। আর সামাজিক সুরক্ষার অধীনে রয়েছে লক্ষীর ভান্ডার, মানবিক পেনশন, কৃষক বন্ধু, বিধবা ভাতা, সামাজিক সুরক্ষা ঘোষণা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
২. দ্বিতীয় ক্ষেত্র অর্থাৎ উপার্জনের আওতায় রাখা হয়েছে যুবশ্রীর মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রকল্পকে।
৩. তৃতীয় ক্ষেত্রে স্থান দেওয়া হয়েছে শিক্ষাকে। আর শিক্ষার আওতায় রয়েছে কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, শিক্ষাশ্রী সহ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড-এর মতো প্রকল্প।
৪. চতুর্থ ক্ষেত্রে রয়েছে স্বাস্থ্য। আর স্বাস্থ্যের আওতায় রয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প।
৫. পঞ্চম ক্ষেত্রে রয়েছে আবাস। আর সাধারণ মানুষের বাসস্থানের ক্ষেত্র সুরক্ষিত করতে এক্ষেত্রে বাংলা আবাস যোজনা এবং নিজ গৃহ নিজ ভূমি স্কিমকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
৬. ষষ্ঠ ক্ষেত্রে রয়েছে জয় বাংলা এবং জয় বাংলার অধীনে স্থান দেওয়া হয়েছে জয় জোহার ও তপশিলি বন্ধু প্রকল্পকে।
বিভিন্ন রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, আগামী ১১ ই জানুয়ারি থেকে এই নতুন প্রকল্প কার্যকর করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে এই সাড়ে তিন লক্ষ দূতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা বাংলার প্রতিটি পরিবারের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার কথা শোনেন এবং দিদির সুরক্ষা কবচ প্রকল্পের আওতায় থাকা সমস্ত প্রকল্পগুলি সম্পর্কে তাদের বিস্তারিত তথ্য জানান। দিদির দূতরা প্রতিটি বাড়িতে ঘুরে ঘুরে ক্যালেন্ডারে এবং ডোর স্টিকার বিতরণ করবেন।
এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, আগত ৮ই জানুয়ারি থেকে প্রত্যেকটি জেলার হেডকোয়ার্টারে কিটব্যাগ পাওয়া যাবে। এই কিটব্যাগে কিভাবে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে তার নির্দেশিকা লেখা থাকবে। এর পাশাপাশি থাকবে দিদির দেওয়া একটি চিঠি। তবে দিদির দূতরা যাতে সঠিকভাবে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতে পারে তার জন্য রাজ্যের নেতৃবৃন্দ গ্রামাঞ্চলে এবং শহরাঞ্চলে এই সমস্ত দূতদের প্রশিক্ষণ দেবেন। এছাড়াও রাজ্যের নেতারা বিভিন্ন গ্রামে এবং শহরাঞ্চলে একটি করে রাত থাকবেন। এর পাশাপাশি প্রত্যেকটি গ্রামের বাসিন্দাদের সাথে জনসংযোগ সভা আয়োজন করবেন বলেই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।